শ্রীমঙ্গলে সরকারি হাসপাতালে মিলছে না জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন, বাড়ছে ক্ষোভ

এ সময়ের মধ্যে অন্তত ১২৩ জন রোগী ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন কিনে হাসপাতালে এসে তা পুশ করিয়েছেন। হাসপাতালটির ৫০ শয্যার ওপর নির্ভরশীল উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ। ফলে ভ্যাকসিন সংকটে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।

টিকরিয়া গ্রামের দিহান আহমেদ জানান, তার ৬ বছরের ভাইকে বিড়াল কামড়ালে হাসপাতালে গেলে জানানো হয়—ভ্যাকসিন নেই। পরে বাধ্য হয়ে ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হয়েছে। রাজঘাট চা বাগানের পার্থ মণ্ডল বলেন, “বেওয়ারিশ কুকুরে কামড়ানোর পর চিকিৎসক ভ্যাকসিন নিতে বললেও হাসপাতালে পাইনি। বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হয়েছে।” সিন্দুরখান ইউনিয়নের নাসিমা বেগম বলেন, “গরিব মানুষের জন্য সরকারি ভ্যাকসিনই ভরসা। কিন্তু তা না থাকায় আমাদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে।”

বিরাহিমপুরের জামিল মিয়া জানান, “হাসপাতালে গেলে প্রথমেই বলা হয়—বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনুন। এতে সময়, টাকা এবং ঝুঁকি—সবই বাড়ছে।”

জলাতঙ্ক প্রতিষেধক হিসেবে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন (এআরভি) ও র‌্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিন (আরআইজি) ব্যবহার করা হয়। সাধারণ ভ্যাকসিনের দাম বাজারে ৫০০ টাকার কাছাকাছি এবং একটি ডোজ দিয়ে চারজন রোগী চিকিৎসা নিতে পারে। আর গভীর ক্ষতের আরআইজি ভ্যাকসিনের দাম প্রায় ১,০০০ টাকা। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মানুষের জন্য এই ব্যয় অনেক বড় চাপ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালটেন্ট ডা. বিশ্বজিত দেব বলেন, “ক্ষত ও রোগীর ওজনভেদে ডোজ নির্ধারণ করা হয়। যেমন ১০০ কেজি ওজনের রোগীকে চার থেকে পাঁচটি ডোজ দিতে হতে পারে। ভ্যাকসিন না থাকায় অনেকেই ঝুঁকিতে পড়ছেন।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসমিন জানান, “সরকারি ভ্যাকসিন না থাকায় কয়েকদিন ধরে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চাহিদা পাঠানো হয়েছে, ভ্যাকসিন পেলেই আবার বিনামূল্যে সেবা চালু হবে।”

সরকারি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার এমন সংকটে মানুষের প্রশ্ন—ভ্যাকসিন সংকটের সমাধান কবে?