প্রকাশ: ৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৫৫
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদ দিয়ে ভেসে এসেছে বড় আকারের এক মরা গন্ডার। সোমবার নদীর স্রোতে ভেসে এসে এটি তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাট গোপালপুর এলাকার চরে আটকা পড়ে। বিরল এই দৃশ্য দেখতে ভিড় জমাচ্ছে কৌতূহলী মানুষ। এলাকাজুড়ে এখন আলোচনার বিষয় গন্ডারটি কীভাবে এলো এবং কোথা থেকে এসেছে।
স্থানীয়দের ধারণা, সাম্প্রতিক বন্যায় গন্ডারটি পানির স্রোতে ভেসে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সম্ভবত বন্যার পানিতে ডুবে মারা গিয়েছিল প্রাণীটি। নদীর পানির টানে এটি দুধকুমার নদ হয়ে তিলাই ইউনিয়নের চরে এসে আটকে যায়। এরপর থেকেই মরা গন্ডারটি চরের বালুচরে পচতে শুরু করেছে।
এলাকার বাসিন্দা মহির উদ্দিন বলেন, গন্ডারটি ভারত থেকে এসেছে বলে তাদের ধারণা। এখন পচে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যা আশপাশের মানুষের চলাফেরায় সমস্যা তৈরি করছে। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন বিভাগ ও যাদুঘর কতৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
তিলাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম জানান, বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলার বন কর্মকর্তা, যমুনা সেতু যাদুঘরের কিউরেটর এবং উপজেলা বন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাদের পরিদর্শনে দেখা যায়, গন্ডারটির দেহে পচন ধরেছে এবং সরানো সম্ভব হচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান বলেন, মরা গন্ডারটি অত্যন্ত বড় ও ভারী। চর এলাকা থেকে এটি স্থানান্তর করা সম্ভব নয়। তাই যাদুঘর কর্তৃপক্ষের পরামর্শে এটিকে সেখানেই ঢেকে রাখা হয়েছে, যাতে প্রাণীর দেহাবশেষ সংরক্ষণ করা যায়।
যমুনা সেতু যাদুঘরের কিউরেটর রানা জানান, গন্ডারের দেহাবশেষ ভবিষ্যতে শিক্ষা ও গবেষণা কাজে ব্যবহার করা হবে। এটি সংরক্ষণ করলে প্রাণিবৈচিত্র্য ও পরিবেশবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
স্থানীয় শিশু মোহাম্মদ জানায়, সে জীবনে কখনো গন্ডার দেখেনি। তাই খবর শুনে সে ঘটনাস্থলে আসে। এলাকাজুড়ে এমন দৃশ্য দেখার আগ্রহে মানুষের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে।
ভূরুঙ্গামারীর মানুষ বলছেন, এই ঘটনাটি একইসঙ্গে দুঃখজনক ও শিক্ষণীয়। প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণ রক্ষায় সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। বন্যার সময় বন্যপ্রাণীদের জীবন রক্ষায় পর্যাপ্ত উদ্যোগ না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।