প্রকাশ: ৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪২
কুমিল্লার দেবীদ্বারে এক পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে এক নারী ও বিএনপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার বুড়িরপাড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আটকরা হলেন—ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্যের চাচী আমেনা বেগম (৪৫) এবং বিএনপি কর্মী গুনাইঘরের মৃত দৌলত খানের ছেলে হেলাল খান (২৮)।
ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে। ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্য মো. আবু কাউছার (৩২) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানায় কর্মরত। তিনি দেবীদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের বুড়িরপাড় গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে। অভিযোগ অনুযায়ী, জমি কেনার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে দেবীদ্বার সদরে ডেকে আনেন তার চাচী আমেনা বেগম।
জমি পছন্দ না হওয়ায় আবু কাউছার চলে যেতে চাইলে আমেনা বেগম তাকে আরও একটি জমি দেখানোর কথা বলে ছোট আলমপুর এলাকার ক্বারীমিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আবদুল বারেক ভিলার পঞ্চম তলায় নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পরই হেলাল খান ও কামাল হোসেন তাকে আটক করে ফেলে। এরপর তার সাবেক স্ত্রী আমেনা আক্তারসহ কয়েকজন এসে তাকে ঘিরে ধরে ভিডিও ধারণ করে এবং পুনরায় বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে।
বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে তারা তাকে মারধর করে ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে তারা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। মানসম্মানের ভয়ে পুলিশ সদস্যটি ঘটনাস্থলেই নগদ ১৩ হাজার টাকা ও প্রায় ৫০ হাজার টাকার একটি আংটি দিয়ে দেন।
তাতেও তারা ক্ষান্ত না হয়ে আরও টাকা আদায়ের চেষ্টা চালায়। বাধ্য হয়ে আবু কাউছার তার চাচাতো ভাই খাইরুলের মাধ্যমে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা পাঠান। পরে তিনি তার স্ত্রী ইশরাত জাহানকে ফোন দিলে তিনি এসে স্বামীকে উদ্ধার করেন।
ঘটনার পর ইশরাত জাহান বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় পুলিশ সদস্যের সাবেক স্ত্রী তাছলিমা আক্তার, চাচী আমেনা বেগম, বিএনপি নেতা বিল্লাল হোসেন বিল্লু, কানা জালাল, কামাল হোসেন ও হেলাল খানসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়রা অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।