প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:২১
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতিকে ব্যর্থ হতে দিতে হলে আমাদের নিজেদের মধ্যে বিভাজন থাকতে হবে, কিন্তু আমরা সেটা চাই না। মঙ্গলবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো সব ধর্ম, বিশ্বাস ও সম্প্রদায়কে সমানভাবে দেখা। ধর্মীয় পার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু রাষ্ট্র কোনো নাগরিকের সঙ্গে ধর্ম, পরিচয় বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে বৈষম্য করবে না।
ড. ইউনূস বলেন, আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে চাই যা বিশ্ব অনুসরণ করবে। জুলাই আকাঙ্খা বাস্তবায়নের জন্য সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিভাজন জাতিকে পিছিয়ে দেয় এবং সমৃদ্ধির পথে বাধা সৃষ্টি করে, তাই আমাদের সংহতি অটুট রাখতে হবে।
এর আগে সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তিনি বিভিন্ন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সভায় তারা প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। ড. ইউনূস অনুষ্ঠানে ধর্মীয় উৎসব ও পূজামণ্ডপের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহ দেখান।
হিন্দু ধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এক হাজারের বেশি নতুন পূজামণ্ডপ তৈরি হয়েছে। সারাদেশে পূজামণ্ডপের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সকল পক্ষ থেকে এবারের পূজায় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। বিশেষভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
ড. ইউনূস এই সময় নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান, সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সমঝোতা ও পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, ধর্মীয় উদযাপনকে সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসন ও স্থানীয় সম্প্রদায়কে একসাথে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমাদের লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠন করা, যেখানে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায় সমানভাবে নিজস্ব অধিকার ও সুযোগ পাবে। এই সংহতি ও সহমর্মিতা দেশের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য।
ড. ইউনূসের এই পরিদর্শন ও বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, ধর্মীয় সহমর্মিতা, সমন্বয় এবং সংহতি দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
এই ধরনের উদ্যোগ দেশের নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ভ্রাতৃত্ববোধ বাড়াতে সাহায্য করছে। ড. ইউনূসের বার্তা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও দিকনির্দেশনা হয়ে থাকবে।