প্রকাশ: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:১৪
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কূটনীতিতে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পর নতুনভাবে যুক্ত হওয়া ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক এলাকা এখন দেশের জন্য এক বিরাট সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। গ্যাস, খনিজ এবং সামুদ্রিক সম্পদের ভাণ্ডার ছাড়াও এটি দেশের যোগাযোগ ও বাণিজ্যে এক নতুন মাত্রা যোগ করছে।
বঙ্গোপসাগর শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক করিডর হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। সমুদ্রপথে ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ এ অঞ্চলের ভূরাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ব্লু ইকোনমি, আঞ্চলিক সহযোগিতা, নৌবন্দর উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কূটনীতিকে ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণের মূল এজেন্ডা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দলটির মতে, আগামীর বাংলাদেশ নির্ভর করবে বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা রাজনীতি ও কূটনৈতিক অবস্থানের ওপর।
সম্প্রতি ঘোষিত এনসিপির ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন কক্সবাজারের তরুণ রাজনীতিক এ এস এম সুজা উদ্দিন। তিনি একই সঙ্গে দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
সুজা উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূরাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরীয় রাজনীতি নিয়ে তার পরিকল্পনা ও কর্মপরিকল্পনা রাজনৈতিক অঙ্গনে আলাদা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে সুজা উদ্দিন জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগর শুধু ভূরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু নয়, বরং আগামী প্রজন্মের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের মূল ভিত্তি। তার মতে, আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর উপস্থিতি এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এই অঞ্চলকে আরও সংবেদনশীল করে তুলছে।
চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন বঙ্গোপসাগরে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। সমুদ্র নিরাপত্তা, নৌচলাচলের স্বাধীনতা, জলদস্যুতা রোধ এবং জ্বালানি সম্পদ আহরণ এ অঞ্চলের আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশের জন্য সঠিক কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
এরই মধ্যে সুজা উদ্দিন কক্সবাজার ও উপকূলীয় অঞ্চলে তরুণদের নিয়ে কয়েকটি সেমিনারের আয়োজন করেছেন। এসব সেমিনারে ব্লু ইকোনমি, আঞ্চলিক কূটনীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয়। তরুণ প্রজন্মকে অন্তর্ভুক্ত করে তিনি একটি সচেতন সমাজ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
এনসিপির শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, সুজা উদ্দিনের যোগদান শুধু কক্সবাজার নয়, বরং গোটা দক্ষিণাঞ্চলের তরুণ সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হবে। তাদের বিশ্বাস, আগামীর বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ‘বঙ্গোপসাগরীয় রাজনীতি’ হবে এক অগ্রণী শক্তি।