প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৯
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় স্ত্রীকে ওষুধ আনতে পাঠিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন আলাউদ্দিন শেখ নামে এক ব্যক্তি। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের গোতমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আলাউদ্দিন শেখের বয়স ছিল ৫০ বছর। তিনি ওই গ্রামের মৃত কুরমান শেখের ছেলে। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী এই ব্যক্তি জীবনের বেশিরভাগ সময় সংগ্রামের মধ্যে কাটিয়েছেন। একসময় বাড়ির পাশে ছোট্ট মুদি দোকান চালালেও অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতেই শুয়ে থাকতেন।
তার স্ত্রী নাসিমা বেগম জানান, আলাউদ্দিন শেখের একটি পা জন্ম থেকেই চিকন ও দুর্বল ছিল। এক বছর আগে তিনি স্ট্রোক করলে শরীরের এক পাশ প্যারালাইজড হয়ে যায়। এর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি চোখের সমস্যার কারণে অপারেশন করালেও তিনি দেখতে সক্ষম হননি।
বুধবার সকালে স্বামীর যত্ন নিতে গিয়ে নাসিমা বেগম তাকে ভাত ও রুটি খাইয়ে দেন এবং মাথায় পানি দেন। এরপর আলাউদ্দিন হৃদরোগের সমস্যা বেড়েছে বলে জানিয়ে স্ত্রীকে ওষুধ আনতে বলেন। নাসিমা বেগম দুপুরে তাকে ঘরের বারান্দায় চৌকিতে শুইয়ে রেখে বাজারে ওষুধ আনতে যান।
ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফেরার পর তিনি দেখেন, বারান্দার বাঁশের আড়ার সাথে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়েছেন আলাউদ্দিন। ঘটনার আকস্মিকতায় শোকাহত নাসিমা বেগম ধারণা করছেন, দীর্ঘদিনের অসুস্থতা ও শারীরিক যন্ত্রণায় ভুগে স্বামী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
ঘটনার পর স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে কালুখালী থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, আত্মহত্যার পেছনে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা ও মানসিক চাপ কাজ করেছে।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আলাউদ্দিন শেখ ছিলেন শান্ত স্বভাবের এবং এলাকায় পরিচিত একজন মানুষ। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতা এবং সীমিত চলাফেরার কারণে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।