প্রকাশ: ৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:২৪
দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম লাগাতার বাড়ছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ, মুরগির ডিম এবং বিভিন্ন সবজির দাম গত এক সপ্তাহে ব্যাপক হারে বেড়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় এই মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে। বাজারে চালের দাম আগের মতোই বেশি থাকলেও নতুন দরদর বাড়ার আগ্রহ নেই। দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়েছে, বিশেষ করে গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজনের ভোক্তা জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর খিলক্ষেত, কারওয়ান বাজার, শাহজাদপুর, বাড্ডা, নতুন বাজার ও রামপুরার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা হয়ে গেছে, যা আগের দামের চেয়ে ১৫-২০ টাকা বেশি। ডিমের দামও প্রতি ডজন ১০ টাকা বেড়েছে। এসব পণ্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি অন্যান্য সবজির দামও চড়া।
ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত শনিবার তিনি খিলক্ষেত বাজার থেকে দেশি পেঁয়াজ কিনেছিলেন ৫৫ টাকায়, কিন্তু শুক্রবার দেখেন একই পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ২০ টাকা দাম বেড়ে যাওয়ায় তিনি হতবাক হয়েছেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখনই তো নতুন মৌসুম শুরু হয়নি, আবারও এমন দাম বৃদ্ধির কি কারণ?’
গত এক সপ্তাহে শুধু পেঁয়াজ নয়, মুরগির ডিম, মসুর ডাল, টমেটো ও ভোজ্যতেলসহ আরও অনেক জিনিসের দাম বেড়েছে। এতে শ্রমজীবী ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একদিকে বৃষ্টির কারণে কাজের সুযোগ কমেছে, অন্যদিকে খাবারের দাম বেড়ে জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিক্রেতারা জানান, চলমান বৃষ্টিপাতের ফলে পণ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে, যার কারণে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত এক সপ্তাহে পাইকারি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ১৫ টাকারও বেশি বেড়েছে।
বাজারে দাম বৃদ্ধির এই অবস্থা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যাবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্রেতারা দাবি করছেন, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং তাদের জীবনযাত্রায় স্বস্তি আসে।
সরকারি সংস্থাগুলো থেকে বাজার পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজরদারি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হলে দাম বৃদ্ধি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। পাশাপাশি কৃষি ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে যাতে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে দাম বাড়ার মতো সংকট এড়ানো যায়।