প্রকাশ: ৪ আগস্ট ২০২৫, ১৬:২১
চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউজ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম হারুন অর রশিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ক্লাবের একটি ভিআইপি কক্ষ থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, রোববার রাতে তিনি চট্টগ্রাম ক্লাবে রাত্রিযাপন করতে আসেন। সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো সাড়া না পাওয়ায় ক্লাব কর্তৃপক্ষ দরজা ভেঙে কক্ষে প্রবেশ করে। তখন বিছানার ওপর নিথর অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন জানান, সাবেক সেনাপ্রধান রোববার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসেন। বিকেল ৪টার দিকে তিনি ক্লাবের কক্ষে ওঠেন এবং পরে বেরিয়ে রাত পৌনে ১১টার দিকে পুনরায় কক্ষে ফেরেন। কক্ষে ঢোকার আগে তিনি ব্রেকফাস্টের সময় জেনে নেন।
পরিবারসূত্রে জানা যায়, সোমবার তার চট্টগ্রামে একটি মামলার হাজিরা ছিল। এজন্যই তিনি ঢাকাফেরত চট্টগ্রামে আসেন। চট্টগ্রাম ক্লাবের রুমে একাই অবস্থান করছিলেন। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানায়, তার অসাড়তা টের পেয়ে দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া হয়, তবে ততক্ষণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এম হারুন অর রশিদ চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বাসিন্দা হলেও স্থায়িভাবে ঢাকায় বসবাস করতেন। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৫ বছর। তিনি একজন খ্যাতিমান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত ছিলেন।
২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দশম প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশের সামরিক ইতিহাসে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
অবসরের পর তিনি ডেসটিনি গ্রুপের সঙ্গে ব্যবসায়িকভাবে যুক্ত হন। ডেসটিনির আর্থিক কেলেঙ্কারিতে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয় এবং সে মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলও খেটেছেন।
দেশের এক গর্বিত যোদ্ধা ও সাবেক সেনাপ্রধানের এমন পরিণতি অনেকের হৃদয়ে বেদনার ছাপ ফেলেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।