প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১১:৪১
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) কর্মরত আইন বিভাগের সেকশন অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুনকে জুলাই আন্দোলনে হামলার অভিযোগে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকেই তাকে আটক করে প্রথমে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। আবদুল্লাহ আল মামুন একসময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-স্কুল বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানা যায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার শাহবাগ এলাকায় দেশীয় অস্ত্র হাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করেন মামুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ঘটনার ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে নোবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তাকে আটক করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা আইন বিভাগে কর্মরত ওই কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছি। পাশাপাশি ঘটনাটি তদন্তে ৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
আবদুল্লাহ আল মামুন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মামুনের রাজনৈতিক পরিচয় এবং অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে ইতিপূর্বেও ক্যাম্পাসে আলোচনা চলছিল। তবে এবার সরাসরি হামলার প্রমাণ সামনে আসায় প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, নোবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আমরা তাকে থানায় নিয়ে এসেছি। প্রয়োজনীয় আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছাত্রদের ওপর হামলার ভিডিও প্রকাশিত হওয়ায় দোষীদের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে একজন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ উঠা এবং তাকে পুলিশে দেওয়ার ঘটনাটি শিক্ষা অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনিক পর্যায়ে রাজনীতির প্রভাব এবং সহিংসতায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনাই এখন সময়ের দাবি। নোবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ অনেকের নজরে এসেছে এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য এটি একটি বার্তা হতে পারে।