প্রকাশ: ৯ জুলাই ২০২৫, ১৩:২
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে এক চীনা শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিহতের নাম ওয়াং চিয়াং গো (৩০), যিনি খনির ১৩০৫ নম্বর ফেসে কাজ করছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে যন্ত্রাংশ অপসারণের সময় একটি হাইড্রোলিক দুর্ঘটনায় তিনি যন্ত্রের নিচে চাপা পড়েন। দ্রুত উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একই দিনে ঘটেছে আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা, খনির মাইনিং কাজে ব্যবহৃত একটি অবিস্ফোরিত ডেটোনেটরের বিস্ফোরণে ইলিয়াস হোসেন (১০) নামে এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে শিশুটি খনির ইয়ার্ড থেকে একটি পরিত্যক্ত ডেটোনেটর কৌতূহলবশত বাড়িতে নিয়ে যায় এবং সেটির সঙ্গে মোবাইল ফোনের ব্যাটারির সংযোগ দেয়। কিছুক্ষণ পর সেটি বিস্ফোরিত হলে ইলিয়াসের ডান হাতের তিনটি আঙুল উড়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইলিয়াস চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চীনা শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। একই সঙ্গে শিশুটির আহত হওয়ার বিষয়ে খনি এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পরিত্যক্ত বিস্ফোরক সামগ্রী সংরক্ষণের দায়িত্ব পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কয়লা খনির আশপাশে এমন বিস্ফোরক বা যন্ত্রাংশ পড়ে থাকা নতুন কিছু নয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে এলাকাবাসী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের জন্য এমন ঘটনা চরম উদ্বেগের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে খনি এলাকার আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার এবং সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর আহ্বান জানিয়েছে এলাকাবাসী।
দুইটি ভিন্ন সময়ে ঘটলেও মঙ্গলবারের এই দুটি দুর্ঘটনা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকায় নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তদারকি নিয়ে। খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং নিহত ও আহতের পরিবারকে সহযোগিতা দেওয়া হবে।