প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১৬:১৭
ঝালকাঠির নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়ন পরিষদে চাঁদার দাবির জেরে আটদিন ধরে তালা ঝুলে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা ন্যূনতম নাগরিক সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাজমুল আহসান নান্টু মল্লিক দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তা না পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের দরজায় তালা লাগিয়ে পরিষদের কার্যক্রম অচল করে দেন। গত ২২ জুন স্থানীয় চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বাবুল মৃধার বিরুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্রের মহড়ার পরদিন পরিষদ ভবনে তালা ঝুলানো হয় এবং এরপর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি। চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, প্রকাশ্যে হত্যার হুমকির পাশাপাশি চাঁদা না দিলে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ারও হুমকি এসেছে তার ওপর। তিনি বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। চেয়ারম্যান আরও বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে নাজমুল আহসান নান্টুর ভাই ও ঘনিষ্ঠরা সরাসরি জড়িত ছিলেন এবং স্থানীয়দের প্রতিবাদে তাদেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করা হলেও এমন উগ্র কায়দায় পরিষদ বন্ধ করে রাখা কখনোই কাম্য নয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সালেহা বেগম জানান, বাবুল মৃধা দলের উর্ধ্বে গিয়ে মানুষের জন্য কাজ করতেন, এখন তার বিরুদ্ধে এমন সহিংস আচরণ কেন হচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন না। পরিষদ তালাবদ্ধ থাকায় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন থেকে শুরু করে সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো কাজই করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। ওয়ার্ড মেম্বার হারুন খন্দকার ও সংরক্ষিত মেম্বার আয়শা আক্তার রিনাও পরিষদ তালাবদ্ধ থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার দায় বিএনপি নেতাদের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। অপরদিকে অভিযুক্ত নান্টু মল্লিক সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চাঁদার কোনো প্রশ্নই আসে না এবং চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আন্দোলন এলাকাবাসীর ক্ষোভ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।
নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুর রহমান হেলাল খান এই ঘটনাকে ‘ফ্যাসিস্ট প্রতিরোধ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন এবং প্রশাসনকে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ না পেলেও মৌখিকভাবে ঘটনা জানার পর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিএনপির নেতারা এরপর পরিষদে তালা দেয়। চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি হওয়ায় রাজনৈতিক উত্তেজনাও প্রকট হয়েছে বলে মনে করছে সচেতন মহল।