প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১৭:১
নোয়াখালীর সোনাপুরে শিশু হেফজ ছাত্র জোবায়ের ইবনে জুদানের রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার দুপুরে নোয়াখালী সদর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের স্থানীয়রা জুদানের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। তারা মহাসড়কের একাংশ অবরোধ করায় সোনাপুর-সাহেবেরহাট সড়কে প্রায় আধাঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে, যা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন নিহত শিশুর বাবা আমিনুল ইসলাম সোহেল, মা সাবিনা খাতুন জুমা ও এলাকাবাসীর পাশাপাশি অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি। নিহতের বাবা অভিযোগ করেন, ১০ বছর বয়সী জুদান আত্মহত্যা করতে পারে না। তিনি জানান, ৩০ এপ্রিল দুপুরে মাদরাসা থেকে ফোনে জানানো হয়, তার ছেলে অসুস্থ হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জুদান মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং মৃত্যুর কারণ হিসেবে আত্মহত্যার কথা বলা হয়।
জুদানের পরিবারের দাবি, মৃত্যুর দুই দিন আগে একটি খেলাকে কেন্দ্র করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জুদানকে শাস্তি দেয়। প্রথমে তার মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয়, পরে তাকে টেবিলের নিচে মাথা দিয়ে কান ধরে রাখার অপমানজনক শাস্তি দেওয়া হয়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণেই জুদান মারা যায় এবং পরে সেটিকে আত্মহত্যার ঘটনা হিসেবে সাজানো হয়েছে।
এ ঘটনায় পরিবার থানায় হত্যা মামলা করতে গেলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। মৃত্যুর দুই মাস পার হলেও পরিবার এখনো পর্যন্ত ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পায়নি, যা তাদের হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। এলাকাবাসীর মতে, শিশুটির মৃত্যু রহস্যজনক এবং এটি নিছক আত্মহত্যা নয়, বরং হত্যাকাণ্ড।
এদিকে, সুধারাম থানার ওসি মো. কামরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে এসেছে, যেখানে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ফাঁসিতে ঝুলে মৃত্যু’ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। এলাকাবাসী দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে ভয়, ক্ষোভ এবং শোক বিরাজ করছে। তারা মনে করেন, শিশুদের নিরাপদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করতে হলে এ ধরনের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার জরুরি।