প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১৮:৪৬
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার গ্রামগুলোতে অনলাইন জুয়ার প্রকোপ বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও এই ক্ষতিকর খেলায় লিপ্ত হচ্ছে। অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া চলছে যা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করে পরিচালিত হচ্ছে। ওয়ানএক্সবেট, বেটবাজডট ৩৬৫, ক্রিকেক্স, বেট৩৬৫এনআই ও মসবেটসহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইট থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে কম পরিমাণ টাকা দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীতে লোভে পড়ে তরুণেরা তাদের সম্পদও হারাচ্ছে। অনলাইন জুয়া দেশের একটি নতুন আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে জুয়ার এই আধুনিক মাধ্যম তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
অনলাইন জুয়ার এজেন্টরা মূলত বিদেশ থেকে পরিচালিত সাইটগুলো দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। মাঠের হাট-বাজার থেকে শুরু করে পাড়ার চায়ের দোকানে প্রকাশ্যে এই জুয়ার আসর বসে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। এক যুবক জানান, অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে তিনি দোকান-ঘর ও জমি বিক্রি করে চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক ব্যবসায়ী এবং তরুণদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কিছু অনলাইন জুয়ার এজেন্ট অ্যাপস বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে বহু লোক তাদের অর্থ হারিয়েছে।
এই অনলাইন জুয়ার থাবা সমাজের নানা শ্রেণিতে ব্যাপক ক্ষতি করে চলেছে। তাই পরিবার ও সমাজের সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সন্তানদের মোবাইলে অতিরিক্ত সময় ব্যয়, অনলাইন জুয়া খেলার প্রবণতা নিয়মিত নজরদারি করতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এই সমস্যা মোকাবেলা সম্ভব হতে পারে। অনলাইন জুয়া মানবিক, শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দ্রুত ও কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল হাসান জানান, মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া পরিচালিত হচ্ছে এবং এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও তারা এজেন্টদের ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “অনলাইন জুয়ার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, তবে পুলিশ সজাগ রয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধ দমনের জন্য কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।” স্থানীয়রা আশা করছে, দ্রুত আইন প্রয়োগে অনলাইন জুয়ার এড়িয়ে সরাইলের তরুণ সমাজকে নিরাপদ রাখা যাবে।