প্রকাশ: ৬ জুন ২০২৫, ১৬:২৩
জামালপুর জেলার ইসলামপুর ও সরিষাবাড়ি উপজেলার অন্তর্ভুক্ত ২০টি গ্রামে শুক্রবার সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন প্রায় দুই হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান। সকাল থেকেই এসব গ্রামের মানুষ নিজ নিজ মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ এবং বাড়ির উঠানে ঈদের জামাতে অংশ নেন। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ঈদ পালন করে আসা এই গ্রামগুলোতে ঈদের আনন্দ ছিল একেবারেই ভিন্নরকম।
ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের রামভদ্রা, সাপধরী ইউনিয়নের পশ্চিম মন্ডলপাড়া এবং সরিষাবাড়ি উপজেলার বলারদিয়া, বাউসী, সাতপোয়া, পঞ্চপীর, সাঞ্চারপাড়, পাখাডুবি, বনগ্রাম, বালিয়া, হোসনাবাদ, পাটাবুগা, পুঠিয়ারপাড় ও বগারপাড়সহ মোট ২০টি গ্রামে ধর্মীয় পরিবেশে ঈদ উদযাপন করা হয়। এখানকার মুসল্লিরা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সময় মেনে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করে আসছেন।
ঈদের নামাজ শেষে মসজিদে এবং ঈদগাহ মাঠে খোতবা প্রদান করা হয়। এরপর ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কোরবানির পশু জবাইয়ের মাধ্যমে ঈদের মূল আচার পালন করেন। এলাকাবাসীর মতে, ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী পৃথিবীর যেকোনো স্থানে চাঁদ দেখা গেলে সেই অনুসারে রোজা ও ঈদ পালন করা বৈধ এবং শরিয়তসম্মত।
স্থানীয় রায়েরপাড়া ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত পরিচালনা করেন মাওলানা মো. ইয়াকুব আলী। তিনি বলেন, পৃথিবীতে চাঁদ একটাই, তাই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে সেই অনুসারে ইবাদত করাই যুক্তিযুক্ত। তিনি আরও বলেন, আমাদের সমাজের অনেকেই পুরনো পদ্ধতি ধরে রেখেছে, কিন্তু আমরা শরিয়াহ অনুযায়ী ঈদ পালন করি।
এই ব্যতিক্রমী ঈদ উদযাপন দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকেও বহু মানুষ এসে উপস্থিত হন। উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে ঈদের জামাতে ছিল এক উৎসবমুখর পরিবেশ। নামাজ শেষে শুরু হয় পশু কোরবানির প্রক্রিয়া, যা চলে দুপুর পর্যন্ত।
কোরবানির পরবর্তী সময়ে মুসল্লিরা গোশত ভাগ করে নেন এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে বিতরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ সবাই ছিল তৎপর। গোটা এলাকার বাতাসে ছিল একধরনের আধ্যাত্মিক প্রশান্তি ও ধর্মীয় একতা।
এই ঈদ উদযাপন নতুন কিছু নয়, বরং বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এক ধারাবাহিক ধর্মীয় চর্চার অংশ। এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।