প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১৬:৫১
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সামান্য বৃষ্টি হলেই শুরু হয় সীমাহীন দুর্ভোগ। দুই দিনের লাগাতার বৃষ্টিতে সেই দুর্ভোগ এখন চরম আকার ধারণ করেছে। রাস্তার খানাখন্দে জমে থাকা পানিতে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও ছোট যানবাহন পড়ে গিয়ে সৃষ্ট হচ্ছে দীর্ঘ যানজট, ঘটছে দুর্ঘটনা, ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক চলাচল। নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীদের লাগছে অতিরিক্ত সময়, সৃষ্টি হচ্ছে চরম ভোগান্তির।
এই দুর্ভোগের অন্যতম কারণ ধীরগতির চারলেন প্রকল্প। সড়ক উন্নয়নের জন্য আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত যে চারলেন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে তিনটি প্যাকেজে। তবে এর একটি প্যাকেজ বাদ দেওয়ায় তন্তর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত আর চারলেন হচ্ছে না, যা জনদুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিশেষ করে আশুগঞ্জ গোলচত্বর, বিশ্বরোড, রাধিকা ও উজানিসার মতো গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে এখন বৃষ্টির পানি জমে রাস্তাগুলো ছোট পুকুরে রূপ নিচ্ছে। এইসব স্থানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যানজটে আটকে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে চালক-যাত্রীদের। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে বিশ্রাম নিচ্ছেন, কেউবা ঘুমিয়েও পড়ছেন।
বিশ্বরোড এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, ঈদের আগে যদি এই অবস্থার উন্নতি না হয়, তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। শুধু দুর্ভোগ নয়, ঈদের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বিরাশার বাসস্ট্যান্ডের গ্যাস ফিল্ড এলাকায়ও দেখা যায় একই চিত্র। প্রতিদিনই কোনো না কোনো যানবাহন বিশাল গর্তে পড়ে আটকে যায়, ফলে পুরো রাস্তায় তৈরি হয় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।
সরকারি তথ্যমতে, প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ৩০ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর অগ্রগতি মাত্র ৫৭ শতাংশ। অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে প্রকল্পের মেয়াদ আরও ২ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এই ধীরগতি ও অপ্রস্তুত অবকাঠামোর কারণে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক এখন সাধারণ মানুষের জন্য অভিশাপের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নের স্বপ্ন নিয়ে শুরু হওয়া প্রকল্প এখন বর্ষায় পরিণত হয়েছে দুর্ভোগের প্রতীকে।
জনগণের দাবি, দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্পটি শেষ করে সড়কে স্বাভাবিক যাতায়াত নিশ্চিত করা হোক, যাতে আর কোনো যাত্রী বৃষ্টির দিনে দুর্ভোগে না পড়েন।