প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১৭:৩২
চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানায় একটি পোশাক কারখানা থেকে বড় পরিমাণ সন্দেহজনক ইউনিফর্ম জব্দের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে এই ইউনিফর্মগুলো উদ্ধার করে। অভিযোগ রয়েছে, এগুলো পার্বত্য এলাকার সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর জন্য তৈরি করা হচ্ছিল। অভিযানে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে এই ধরনের ইউনিফর্ম জব্দের ঘটনা তিনবার ঘটেছে। এর আগে সোমবার নগরের একটি গুদাম থেকে ১১ হাজার ৭৮৫টি ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। পুলিশ মনে করছে, এসব ইউনিফর্ম কেএনএফের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল। তবে চট্টগ্রাম পুলিশের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
এর আগেও ১৭ মে রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়ারহাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ২০ হাজার ৩০০টি ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ওই ঘটনার তদন্ত করছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দুই কোটি টাকার চুক্তিতে এই ইউনিফর্ম তৈরি করা হচ্ছিল। এই মামলায় কারখানার মালিক সাহেদুল ইসলাম এবং অর্ডারদাতা গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি রাঙ্গামাটির কাপ্তাই এলাকার মংহলাসিন মারমাকেও আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ অভিযান ও গ্রেপ্তার কার্যক্রম কেএনএফের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে সরকার বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। এই ইউনিফর্ম জব্দের ঘটনা তারই এক প্রমাণ বলে মনে করছে নিরাপত্তা বাহিনী।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই ধরনের ঘটনা দেখে উদ্বিগ্ন হলেও আশ্বস্ত যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্ত্রাস দমনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এমন কোনো কার্যক্রম যাতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো সক্রিয় হতে না পারে তা রোধের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, এই ধরনের ইউনিফর্ম জব্দ কার্যক্রমে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আরও সতর্ক হয়েছে এবং ভবিষ্যতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। চট্টগ্রাম শহর এবং পার্বত্য এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কাজ আরও জোরদার করা হয়েছে।