প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১৬:৫৭
ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)-তে ড্রাইভিং লাইসেন্সের নামে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগে বলা হয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে লাইসেন্স বাবদ টিটিসি কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে ঘুষ হিসেবে টাকা আদায় করে আসছে।
প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও এ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ, তবে বেশিরভাগই ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির ইলেকট্রনিক্স ট্রেডের প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি দাবি করেন, বিআরটিএ-র দালাল পরিচয়ধারী খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম অটোমোটিভ ট্রেডের চিফ ইন্সট্রাক্টর সাদেকুল ইসলাম, যিনি সরাসরি ঘুষ লেনদেনে যুক্ত বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও শোকজ করা হয়েছে অভিযোগকারী প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে। তিনি বলেন, “আমাকে হুমকি ও হয়রানি করা হচ্ছে, তবে আমি যা সত্য তাই প্রকাশ করেছি। দুদক তদন্ত করলেই সব প্রমাণিত হবে।”
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের একটি দল ঠাকুরগাঁও বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালায় এবং অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর অনুসন্ধান শুরু করে। দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয়েছে এমন স্পষ্ট তথ্য তাদের হাতে এসেছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, যারা টাকা দিয়েছে কেবল তারাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং যারা দেয়নি তাদের ফেল করানো হয়েছে। তেল বরাদ্দ ও সরকারের প্রাপ্য ভাতাও সঠিকভাবে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন তারা।
অন্যদিকে অভিযুক্ত প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার নামে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে এবং যারা এই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান বলেন, “প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই, কেউ নিয়ে থাকলে তা ব্যক্তিগত পর্যায়ে ঘটতে পারে।”
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী বলেন, অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য বিরাজ করছে।