প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১২:১৯
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক বছরের মাথায় অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে কুমিল্লার দেবীদ্বারের আলোচিত যুব মহিলালীগ নেত্রী ইয়াছমিন মেম্বারকে। গত বছরের ৪ আগস্ট ওই আন্দোলনের সময় সহিংস ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে আবুবকরকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যা এখন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে ইয়াছমিন মেম্বারকে গ্রেফতার করে দেবীদ্বার থানা পুলিশ। তার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ।
গ্রেফতার হওয়া ইয়াছমিন মেম্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের বেতরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় আবু বক্করের স্ত্রী এবং খোরশেদ আলমের মেয়ে। রাজনীতিতে সক্রিয় এই নারী নেত্রী যুব মহিলালীগের উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি এবং রাজামেহার ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সংরক্ষিত নারী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তাকে ঘিরে আলোচনার মূল কারণ ছিল গত বছর ৪ আগস্ট নিউমার্কেট এলাকায় সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান নেওয়ার একটি ভিডিও, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। সেই সময় থেকেই তিনি নজরদারিতে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওসি শামসুদ্দিন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদে উপস্থিত হলে গেইট থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি যে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী, সেই মামলাটি এখন তদন্তাধীন এবং তাকে আগামীকাল আদালতে হাজির করা হবে।
স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এই গ্রেফতার নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই মামলা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ছিল, আবার কেউ বলছেন, দোষী হলে আইনের আওতায় আসাই সঠিক সিদ্ধান্ত।
এদিকে ইয়াছমিন মেম্বারের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে রাজনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তদন্তে যা প্রমাণিত হবে, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই গ্রেফতারের পর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পুরোনো পর্ব আবার সামনে চলে এসেছে এবং আন্দোলনকালীন সহিংসতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই মামলার নিষ্পত্তি এখন কুমিল্লার রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে পারে।