প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১২:১৫
পিরোজপুরের নেছারাবাদে প্রথম প্রান্তিক পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর ১০ শিক্ষার্থীকে সহকারী শিক্ষক মো. রাসেল মাহামুদ বেত্রাঘাতে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১০ নং বলদিয়া চামী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনার পর স্থানীয়রা ওই শিক্ষকের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের পরিবার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
প্রথম প্রান্তিক পরীক্ষা চলাকালীন ইংরেজি ক্লাস নিয়ে শিক্ষক রাসেল মাহামুদ শিক্ষার্থীদের ফলাফল আশানুরূপ না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে পেটানোর অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় আহত ১০ শিক্ষার্থী বর্তমানে অসুস্থ, যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী জানান, শিক্ষক প্রায়ই ক্লাসে বেত নিয়ে আসেন এবং হঠাৎ করে সবাইকে মারধর করেন। অনেক শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে পিতামাতার কাছে অভিযোগ করে চিকিৎসা নিয়েছে। আরেক পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, তার মেয়ে পরীক্ষায় ভালো ফল করলেও বেত্রাঘাতের শিকার হয়েছে এবং রক্তাক্ত হয়েছে। তারা শিক্ষক কর্তৃক এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং তার বিচার দাবি করেছেন।
অভিযোগের জবাবে শিক্ষক মো. রাসেল মাহামুদ বলেন, তিনি চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস নেননি, তবে শিক্ষার্থীরা ভাল ফল করেনি। তাই তিনি কিছু শিক্ষার্থীকে শাসনের নামে বেত দিয়ে পেটিয়েছেন। তিনি বলেন, “অল্প কিছু মারাও দরকার, না হলে শিক্ষার্থীরা বেপরোয়া হয়ে যায়।” তবে একই সঙ্গে স্বীকার করেছেন, শিশুদের মারধর করা উচিত নয় এবং প্রশিক্ষণে এই ধরনের আচরণের নিন্দা জানানো হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. শিরিন আক্তার ছুটিতে থাকায় সরাসরি মন্তব্য করতে পারেননি, তবে শিক্ষার্থীদের প্রতি অতিরিক্ত মারধরের অভিযোগ শুনেছেন এবং অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নেছারাবাদ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এই ঘটনার ফলে পিরোজপুরের শিক্ষাব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ও ছাত্রদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং মনোভাব পরিবর্তনের পাশাপাশি বিদ্যালয় পর্যায়ে কঠোর নিয়ম প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।