সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় একটি নতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও হাটবাজার স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত খাস জমি পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কৃষ্ণা রায়। মঙ্গলবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সংলগ্ন জেলা পরিষদের নামে থাকা জমি সরেজমিনে ঘুরে দেখেন তিনি।
ইউএনও জানান, “২২ এপ্রিল বিদ্যালয় ও হাটবাজারের জন্য জমি বন্দোবস্তে দুটি আবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে জমা পড়ে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা স্থানটি পরিদর্শন করেছি এবং তদন্ত শেষে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করব।”
আশাশুনি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল কুদ্দুস জানান, “২০১৮ সালে আশাশুনি হাইস্কুল জাতীয়করণ হওয়ার পর আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় প্রতিবছর শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে না পেরে ঝরে পড়ছে। তাদের ৮-১০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে দূরবর্তী স্কুলে যেতে হচ্ছে। ফলে নতুন বিদ্যালয় স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে।”
এই প্রয়োজনে চলতি বছরের জানুয়ারিতে অস্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হলেও, স্থায়ী স্থাপনা গড়ে তুলতে জমির অভাব বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য বাজারসংলগ্ন ১.৩৭ একর খাস জমি বন্দোবস্তে আবেদন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, আশাশুনি সদর হাটবাজারের জন্যও জমি প্রয়োজনীয়তার কথা জানান বণিক সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী হাট বসিয়ে ব্যবসা করছি। বর্ষায় কাদা-পানিতে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়ে। বাজারে কোনো স্থায়ী অবকাঠামো নেই, পশু জবাই, মাছ বা কাঁচা তরকারির আলাদা ব্যবস্থা নেই। বাজার কার্যত সন্ধ্যার আগেই নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে।”
এই পরিস্থিতিতে বাজার সম্প্রসারণ এবং ক্রেতা-বিক্রেতার দুর্ভোগ লাঘবে প্রায় ১ একর খাস জমির বন্দোবস্ত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
স্থানীয় জামায়াত নেতা আবু মুছা তারিকুজ্জামান বলেন, “সরকারি খাস জমিতে শিক্ষা ও ব্যবসায়িক অবকাঠামো নির্মাণ ছাড়া এখন আর বিকল্প নেই। অতীতে ব্যক্তিগত জমি দান হতো, কিন্তু এখন সে সুযোগ কমে গেছে।”
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাব সভাপতি জি এম আল ফারুক, ওএস আব্দুর রহিম, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে জমির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।