বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেছেন, রাজনীতি করতে হলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে অন্তরে ধারণ করতে হবে। শুক্রবার বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা যুবদলের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন, যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দেশের জন্য রক্ত ঢেলে দিয়েছে বহু শহীদ, তাদের সন্তান-পরিবার কষ্টে থেকেছে, তবুও তারা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চেয়েছে। একইভাবে ইলিয়াস আলীসহ বহু নেতা গুম হয়েছেন, যারা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, জিয়া পরিবার সব সময় দুর্দিনে দেশের পাশে থেকেছে। ১৯৭১ সালে যখন শেখ মুজিব দেশ ছেড়ে যান, তখন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান পাক-হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দী হয়েছিলেন। মাত্র ৪ বছর বয়সে তারেক রহমান ৯ মাস আর্মির জেলে কারাবরণ করেছিলেন, যা ইতিহাসে বিরল ঘটনা। মা ও দুই সন্তান মিলে কঠিন সেই সময় পেরিয়ে এসেছিলেন দেশের জন্য।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশে আবারও লুটপাট শুরু হয়। তখন শহীদ জিয়াউর রহমান দেশের হাল ধরেছিলেন। তাঁকে গুলশান বা বারিধারায় বাড়ি দেওয়ার প্রস্তাব করা হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, বাংলাদেশই তাঁর বাড়ি। দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, সার্বভৌমত্বের জন্য কাজ করেছেন, তাই আর কিছু চাওয়ার প্রয়োজন নেই।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে একাধিকবার কারাবরণ করতে হয়েছে। শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে না গিয়ে তিনি জনগণের জন্য জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। সন্তানদের ছেড়ে দিয়েও জনগণের পাশে থেকেছেন। তাই বিএনপি করতে হলে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আদর্শ ধারণ করতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, তারেক রহমান নিজের মায়ের চিকিৎসার সময় পাশেও থাকতে পারেননি, ভাইয়ের জানাজায়ও অংশ নিতে পারেননি। নিজের পরিবারের চেয়ে দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি ৩১ দফা রূপরেখা তৈরি করেছেন, যা শহীদ জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. মাসুম বিল্লাহ পারভেজ এবং সঞ্চালনা করেন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক সুমন। প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সৈয়দ নাজমুল হক, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তালুকদার আবুল কালাম আজাদ।
অনুষ্ঠানে শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের তরুণ নেতারা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।