গাছের দাম নিয়ে দ্বন্দ্ব, ছেলের হাতে মায়ের মৃত্যু জামালপুরে

জামালপুর শহরতলীর চন্দ্রা ঘুন্টি এলাকায় পারিবারিক দ্বন্দ্বের রক্তক্ষয়ী পরিণতিতে এক মায়ের প্রাণ ঝরে গেছে নিজেরই ছেলের হাতে। গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঘটে যাওয়া এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৫০ বছর বয়সী মঞ্জিলা বেগম, যাকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে তার বড় ছেলে মাদকাসক্ত মঞ্জু।

স্থানীয়রা জানান, নিহত মঞ্জিলা বেগম বাড়ির পাশে একটি পুরনো গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেন এবং গাছ কাটার জন্য স্থানীয় শ্রমিক শেখ ফরিদের সাহায্য চান। নির্ধারিত সময়ে ফরিদ কাজ শুরু করতে এলে গাছের মূল্য নিয়ে তার সঙ্গে এবং মায়ের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে মঞ্জু। দীর্ঘদিন ধরে মাদকের প্রভাবে তার আচরণে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছিল বলে জানান প্রতিবেশীরা।

তর্কাতর্কির একপর্যায়ে মঞ্জু হঠাৎ করেই ছুরি হাতে তুলে নেন এবং প্রথমে ফরিদকে আঘাত করেন। সেই মুহূর্তে মায়ের প্রাণ বাঁচাতে ছুটে আসেন মঞ্জিলা বেগম। কিন্তু ছেলের আক্রোশ তখন উন্মত্ত রূপ ধারণ করে, তিনি মাকে একাধিকবার কুপিয়ে নির্মমভাবে জবাই করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মঞ্জিলা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। ছুরি হাতে হত্যাকারী মঞ্জু এরপর দ্রুত পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত গাছ কাটার শ্রমিক শেখ ফরিদকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জামালপুর থানা পুলিশ। তারা ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করেছে এবং মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

থানার ওসি (তদন্ত) আনিছুল আশেকীন জানান, ঘটনার পর থেকেই পুলিশের একাধিক টিম অভিযুক্ত মঞ্জুর সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে। নিহতের পরিবার এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঞ্জু দীর্ঘদিন ধরে মাদকের জগতে জড়িত ছিল এবং মাঝে মধ্যেই পারিবারিক অশান্তি তৈরি করত। ঘটনাটি নিয়ে একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।

এদিকে এমন এক মর্মান্তিক ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলেন, একজন মা যে নিজের সন্তানের হাতে প্রাণ হারাতে পারেন, তা ভাবতেও গা শিউরে ওঠে।