পবিপ্রবি শিক্ষার্থীর পানিতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যু

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে, আর সেই মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও বিক্ষোভ। নিহত শিক্ষার্থীর নাম হুসাইন মোহাম্মদ আশিক। তিনি কৃষি অনুষদের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বাসিন্দা নুর-আলম সরকারের ছেলে। সোমবার বিকেল ৩টার দিকে দুমকি জনতা কলেজ মাঠ সংলগ্ন একটি পুকুরে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ফুটবল খেলার পর বিশ্রামের জন্য পুকুর পাড়ে বসেছিলেন আশিক। এ সময় অসাবধানতাবশত পা পিছলে পড়ে যান পানিতে। তিনি সাঁতার জানতেন না, তাই সাথে থাকা সহপাঠীদের দৃষ্টি আকর্ষণ হওয়ার আগেই মারাত্মকভাবে ঝুঁকিতে পড়ে যান। পরে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুমকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

দুমকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু যখন সহপাঠীরা আশিককে নিয়ে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে পৌঁছায়, তখন সেখানে চিকিৎসক অনুপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। শিক্ষার্থীরা জানান, সময়মতো চিকিৎসা পেলে আশিক হয়তো বেঁচে যেতেন। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসকের অনুপস্থিতি নিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নিহত আশিকের এক সহপাঠী সাকিব জানান, তারা খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েও চিকিৎসা পাননি। কেউ দায়িত্ব নিতে চাননি, দ্রুত সাড়া দেননি। চিকিৎসার অভাবে চোখের সামনে বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে—এ অনুভূতি তাদের হতবিহ্বল করে তুলেছে।

ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা অবিলম্বে দায়ীদের শাস্তি ও হাসপাতালের শৃঙ্খলা ফেরানোর দাবি জানান। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী মহলে শোক ও ক্ষোভ দুইই বিরাজ করছে।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু আসনাত মো. আরিফিন জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে তিন কর্মদিবস সময় ধরা হয়েছিল, পরে সেটি এক কর্মদিবসে হ্রাস করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।