প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১:২৩
ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্কে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড একটি বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, "ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্কের পথে বড় বাধা সীমান্ত হত্যা। এটি দুই দেশের সম্পর্ক ভালো করার অন্তরায়।"
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত হত্যার ঘটনা একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। দুই দেশের সরকারই এ ইস্যুতে একাধিকবার আলোচনা করলেও এখনও এ হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সীমান্ত হত্যা রোধে ভারতকে বারবার উদ্বেগ জানানো হলেও এর সমাধান দেখা যাচ্ছে না।
সবশেষ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে জয়ন্ত কুমার সিংহ (১৫) নামে এক কিশোর ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর গুলিতে নিহত হয়। এ ঘটনায় ওই কিশোরের বাবা মহাদেব সিংহসহ আরও একজন আহত হন। এর আগে ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তে স্বর্ণা দাস নামে এক কিশোরী নিহত হয়।
এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে কড়া প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৫ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকারের কাছে এ বিষয়ে আপত্তি জানায়। তবে এমন প্রতিবাদ সত্ত্বেও সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধের কোনো কার্যকর ফলাফল এখনও দেখা যাচ্ছে না।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রাষ্ট্রপতির দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়ে উত্থাপিত গুঞ্জন সম্পর্কেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, "রাষ্ট্রপতির দ্বৈত নাগরিকত্বের গুঞ্জনটি খুবই স্পর্শকাতর বিষয়, এটা দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের। সবশেষে প্রয়োজনে যুক্ত হতে পারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।"
এই বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট তথ্য না দিলেও, তিনি ইঙ্গিত দেন যে এই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনে এতে যুক্ত হতে পারে।
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধের প্রয়াস হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক আলাপ চালিয়ে আসছে। তবে বাস্তবতা হলো, এমন হত্যাকাণ্ড এখনও চলমান। এ ধরনের ঘটনা দুই দেশের জনগণের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ায় এবং সম্পর্কের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে।