
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ৩:৫৮

দেবীদ্বারে ৪০ বছরেরও অধিক সময় ধরে বাড়িতে যাতায়তের মূল প্রবেশপথটি বন্ধ করে দিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। ফলে গত ৭ দিন ধরে ২ পরিবারের ২৪ সদস্য গৃহবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করে আসার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৮মে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ভৈষেরকোট গ্রামের জাবক্স মুন্সীর বাড়িতে।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে সরেজমিনে ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৪০ বছরেরও অধিক সময় ধরে বাড়িতে যাতায়তের মূল প্রবেশপথটি বন্ধ করে দেয় একই বাড়ির সাজেদুল ইসলামের পরিবার।
প্রায় দু’বছর পূর্বে বাড়ির প্রবেশ পথের পাশের যৌথমালিকানাধীন একটি ছোট পুকুরের ৩ শতাংশ ভূমি আব্দুল আউয়াল মূন্সী থেকে একই বাড়ির সাজেদুল আলম মুন্সীর মেয়ে তাহমিনা আক্তার সুরভী ক্রয় করেন। পরবর্তীতে বাড়ির প্রবেশ পথটির অধিকাংশ জমি তার ক্রয়কৃত জমির অংশ দাবী করে পথটি বন্ধ করে দেন।
গৃহবন্দী বাবুল মিয়া জানান, এ পথ দিয়ে বাড়ির সবাই প্রায় ৪০ বছরেরও অধিক সময় ধরে যাতায়ত করে আসছি। ২ বছর আগে সাজেদুলের মেয়ে আউয়াল মূন্সী থেকে পুকুরের ৩ শতাংশ জমি কিনে পুকুর পাড়ে একটি হাসের খামার তৈরী করে। পুকুর ভরাট করে ওই হাঁসের খামারটি বৃদ্ধি করতে চাইলে পুকুরের অংশিদার হিসেবে আমরা পুকুর ভরাট আইনত নিষিদ্ধ দাবী করে বাঁধা দেই। বাঁধা দেয়ার কারনে আমরা গৃহবন্দী হয়ে পড়ি। ওরা প্রভাবশালী বলে সমাজপতিরা এগিয়ে আসেন না।
ওই বাড়ির মনির হোসেন মূন্সী জানান, প্রায় ১০ বছর পূর্বে আমার বাবা সুরুজ মিয়া মূন্সী আমার বড় চাচা তোতা মিয়া মূন্সী থেকে ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। আমাদের ক্রয়কৃত ৫ শতাংশ জমির মধ্য থেকে পুন:রায় ২ বছর পূর্বে ৩ শতাংশ জমি আব্দুল আউয়াল মূন্সী মালিকানা দেখিয়ে সাজেদুল মুন্সীর মেয়ে সুরভী ক্রয় করে প্রভাব খাটিয়ে বাড়ির প্রবেশ পথটি বন্ধ করে দেয়।

গৃহবন্দী রুহুল আমিন মূন্সীর স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, আমরা বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ করায় সাজেদুলের মেয়ে সুরভী আমার বাচ্চাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেয়ার হুমকী দেয়।
সাজেদুলের মেয়ে অভিযুক্ত তাহমিনা আক্তার সুরভী সড়ক বন্ধের বিষয়ে বলেন, আমার জমি, আমি আমার জমির উপর দিয়ে রাস্তা দেবনা। এখানে আমি একটি হাসের খামার করেছি, খামারটি আমার কেনা পুকুরের অংশ ভরাট করে বাড়াতে চাইলে ওরা বাঁধা দেয়। আমি ওদের রাস্তা দেবনা।
মোহনপুর ইউপি ওয়ার্ড মেম্বার তুহিন মিয়া বলেন, পরিবারটি ও তার আত্মীয় স্বজন প্রভাবশালী, তাই তাদের সালিস করতে কেউ সাহস পায়না। ২৯ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশ নিয়ে বসে সমাধান করার চেষ্টা করব।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ নয়ন মিয়া জানান, বাড়িতে চলাচলের রাস্তা বন্ধের বিষয়ে ভোক্তভুগীরা অভিযোগ করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি, সুরভী আক্তার নামে এক মহিলা ও তার পরিবার পুলিশের সাথে আচরন খারাপ করে। ওদের থানায় ডাকলেও থানায় আসবেনা। তাই আদালতে প্রতিবেদন পাঠাব। আদালতের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
এবিষয়ে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানাকে একাধিকবার ফোন দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি এক সাংবাদিককে জানায়, এখন তিনি নির্বাচন নিয়ে ব্যাস্ত আছেন।