প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ৩:২
ভদ্রতা দেখাব সর্বোচ্চ, আইনের প্রয়োগ হবে শতভাগ। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো প্রার্থীকে কোনো ধরনের বাড়তি সুযোগ নিতে দেওয়া হবে না। অবাধ-সুষ্ঠু-গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আশাশুনি উপজেলার এই নির্বাচন হবে সারা দেশে একটি মডেল নির্বাচন।
সোমবার (২০ মে) সকাল ১১টায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে আশাশুনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত ব্রিফিং প্যারেড শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী এসব কথা বলেন।
মতবিনিময়কালে অন্যদের মধ্যে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনি আলম নুর, আশাশুনি থানার ওসি বিশ্বজিৎ অধিকারী, ওসি (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলামসহ নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকের এসপি মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী বলেন- আপনারা গণমাধ্যমকর্মী, আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। চোখ-কান খোলা রেখে সাংবাদিকদের কাজ করতে হবে, কোথাও কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানানোর আহ্বান জানান।ভোটাররা যাতে করে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে পারে সে বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন- ভোটকেন্দ্রে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।
এমনকি ভোটকেন্দ্রের আশপাশ এলাকায় কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলে কঠোর হস্তে তা দমন করা হবে।নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী কর্তৃক চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা জমা প্রদান সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন- প্রার্থী কর্তৃক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা আমরা পেয়েছি এবং সে মোতাবেক ওই সমস্ত কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মোতায়েন করা হয়েছে।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের কেন্দ্রে অবাধ প্রবেশ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্ন জবাবে তিনি বলেন- চেয়ারম্যানরাও অপরাপর সাধারণ মানুষের মতো। শুধু তার নিজের ভোটটি দিতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন, এর বাইরে কোনো চেয়ারম্যান কোনো অবস্থায় লোকজন নিয়ে কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। চেয়ারম্যান কেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে। কোথাও এর ব্যতিক্রম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
আগামীকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। উপজেলান ১১ ইউনিয়নে ৮৭ ভোটকেন্দ্রের ৬০৪টি ভোটকক্ষে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহনের জন্য প্রশাসন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলার ২ লক্ষ ৩৯ হাজার ২১০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোটারের মধ্যে ১,২১,৯৭৯ জন পুরুষ, ১,১৭,২৩০ জন নারী ও ১ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।
নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ প্রার্থী অংশগ্রহন করেছেন। যার মধ্যে চেয়াম্যান পদে ৩জন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এবিএম মোস্তাকিম (চিংড়ী মাছ প্রতীক), উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু (আনারস প্রতীক), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাজরা ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এসএম শাহনেওয়াজ ডালিম (ঘোড়া প্রতীক) এবং শিল্পপতি আলহাজ্ব গাউসুল হোসেন রাজ (দোয়াত কলম প্রতীক)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী (টিউবওয়েল প্রতীক), আশাশুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি জিএম আল ফারুক (টিয়া পাখি প্রতীক), উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি এনএমবি রাশেদ সারোয়ার শেলী (চশমা প্রতীক), উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আসমাউল হোসাইন (মাইক প্রতীক) ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি এস এম সাহেব আলী (তালা প্রতীক) নিয়ে নির্বাচন করছেন।
এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেমা খাতুন মিলি (কলস প্রতীক), জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সীমা পারভীন (হাঁস প্রতীক), জেলা যুব মহিলা লীগের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা মেহেরুন্নেছা (ফুটবল প্রতীক) ও আশাশুনি সদর ইউপি সংরক্ষিত নারী সদস্য মারুফা খাতুন (বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীক)। প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।