
মোংলা বন্দরে পণ্য খালাস ব্যাহত,, বন্যপ্রাণী নিয়ে শঙ্কায় বনবিভাগ

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১:১৩

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্মচাপের পরিনত হওয়ার পর পরই মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকুলে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অফিস। ফলে টাকা বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে পশুর চ্যানেল ও বনের নদ-নদীতে ৩-৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত তিনদিন যাবত প্লাবিত হচ্ছে সুন্দরবন সরকারি বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন পর্যটক স্পট এবং গোটা সুন্দরবন। করমজলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সুন্দরবনে ভ্রমনে আসা দর্শনার্থীদের।
বন বিভাগ বলছে, রক্ষিত সকল প্রাণীই নিরাপদে রয়েছে, তবে পানি আরো বৃদ্ধি পেলে কেন্দ্রে রাখা প্রাণীসহ বনের গহিনের বন্যপ্রাণীর ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছে তারা। ব্যাহত হচ্ছে বন্দরের বানিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাস কাজ। ঝুঁকি নিয়ে নদী ও খাল পাড়ি দিয়ে চলাছল করছে কর্মজীবি সাধারণ মানুষ।

বন্দর সুত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিনত হওয়ায় মোংলা বন্দর ও সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় এলাকায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। এছাড়া শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ায় স্বাভাবিকের তুলনায় নদীতে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, পাশাপাশি বর্তমানে চলছে পুর্ণিমার গোন। তাই জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে গেছে বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন ও বনের করমজলে সরকারি বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রটি। গত তিনদিন ধরে রাতে ও দুপুরের পর এ অবস্থার সৃষ্টি হয় বনের করমজল ও অন্যান্য পর্যটক স্পর্টগুলোও।
বনবিভাগ বলছে, গত শনিবার থেকে এবারের পুর্ণিমার গোনে সুন্দরবনে সবচেয়ে বেশী পানি হয়েছে। ৩-৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে সমগ্র বন প্লাবিত হলেও গত তিন দিন প্রায় চার ফুট পানিতে তলিয়েছে বন্যপ্রাণী প্রজনন কন্দ্রেসহ পুরো বন। এতে বেশী ক্ষতি হয়েছে যে সকল বন্যপ্রানী গাছে উঠে বসবাস করতে পারেনা এবং মাটিতে ডিম পাড়ে সে সকল বন্যপ্রানী বা তাদের বাচ্চাগুলো মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী বলে জানান তারা। বনে পানি ঢুকে যাওয়ায় উম্মুক্ত ভাবে থাকা বিভিন্ন বন্যপ্রাণী বনের মধ্যে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। করমজলেও এসে আশ্রয় নিয়েছে বনের হরিন, বানর, শুকর সহ অন্যান্য প্রাণী। তবে এখনও পর্যন্ত বনের কোথাও তেমন কোন প্রাণীর মুত্যু বা ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নী।

অপরদিকে, মোংলা বন্দরে অবস্থারত বিভিন্ন পণ্য বোঝাই দেশী-বিদেশী বেশ কয়েকটি বানিজ্যিক জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। জাহাজের কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চললেও সার ও খাদ্যবাহী জাহাজের পণ্য খালাস-বোঝাই কাজ বৃষ্টির সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
বন্দর কেন্দ্রিক চলাচলরত বিভিন্ন নৌযান ও সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর নদীতে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। মোংলা বন্দরের ও পশুর নদীর দুই পাড়ে কয়েকশ’ পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ ও ট্যুরিষ্ট বোর্ডও নিরাপদে ও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া বন্দর সংলগ্ন আশপাশের বিভিন্ন খালেও নৌযানগুলো নিরাপদে নোঙ্গর করে রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ
