প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২১, ২২:৪৭
কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে এমন ক্ষুদে বার্তা পেয়ে রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন লকডাউনে আটকে পড়া দক্ষিণাঞ্চলের পোশাক শ্রমিকরা। পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাও ছুটছেন ঢাকায়। ট্রাক, এ্যাম্বুলেন্স, ভ্যান, টমটম, মোটরসাইকেল বা অটোরিক্সা এলেই হুমরি খেয়ে পড়ছেন তারা।
তবে কঠোর লকডাউনে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। যানবাহন চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে কলকারখানা খোলার এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৃষ্টিতে ভেঁজা রাজধানীমুখী যাত্রী সাধারণ।
সরেজমিনে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী বাস টার্মিনাল এবং এর দূরবর্তী স্থানগুলোতে দেখা গেছে, কঠোর লকডাউনের কারনে যাত্রীবাহি বাস চলাচল না করায় মোটরসাইকেল, বিভিন্ন ধরণের থ্রি-হুইলার ও পণ্যবাহি যানবাহনে নানান কৌশলে যাত্রীরা রাজধানী ঢাকার দিকে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
অনেকে আবার পায়ে হেটেই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তবে সুদূর রাজধানী পর্যন্ত কিভাবে তারা পৌঁছাবেন তা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন অনেকে। একপর্যায়ে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে চলাচালরত পণ্যবাহি ট্রাকের পথরোধও করেন তারা। খবর পেয়ে বিমানবন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পণ্যবাহি ট্রাকের চলাচল স্বাভাবিক করেন।
শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে লকডাউনে অভ্যন্তরীন ও দূরপাল্লার সকল পরিবহন বন্ধ থাকলেও নগরীর রুপাতলী ও নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় রাজধানীমুখি পোশাক শ্রমিকদের ভিড় বাড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাস টার্মিনাল এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে।
যে যেভাবে পারছেন, ঢাকার উদ্দেশ্যে এগুচ্ছেন। পুলিশের চেকপোষ্ট এড়িয়ে মোটরসাইকেল, বিভিন্ন ধরণের থ্রি-হুইলার, রিক্সা-ভ্যান ও পণ্যবাহি যানবাহনে চেপে তারা ঢাকার দিকে ছুটছেন।
ঢাকাগামী পোশাক শ্রমিকরা জানান, কারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে কর্তৃপক্ষ তাদের পহেলা আগস্ট উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়ে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে তাদেরকে রাজধানীমুখি হতে হচ্ছে।
বাকেরগঞ্জ থেকে আসা সাইফুল ইসলাম নামে এক পোশাক শ্রমিক জানান, বাসসহ কোন গণপরিবহন না থাকায় দ্বিগুন খরচে বরিশালে এসেছেন। এখানে এসে কোন যানবাহন না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। শুধু সাইফুল ইসলামই নয়, এরকম হাজারো শ্রমিক ভীড় জমাচ্ছেন নগরীর বাস টার্মিনাল এলাকায়। পোশাক কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে যানবাহন চলাচলের বিষয়টি সুরাহা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
প্রসঙ্গত: ঈদুল আযহার সময় ৮ দিন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায়, পোশাক শ্রমিকরা ওই সময়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলার অসংখ্য মানুষ রাজধানীর বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কাজ করেন। মূলত কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে এখন বিপাকে পড়েছেন তারা।
এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিপ্লব বড়–য়া জানিয়েছেন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।