প্রকাশ: ৭ মে ২০২১, ১৭:৩৫
ঈদের মাত্র আর কয়েকটি দিন বাকী। চলতি বছর সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় দফা লকডাউনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি পালনের শর্তে কিছুটা শিথিল করে দোকানপাট খোলার নির্দেশ দেয়া হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট ও শপিংমল খোলা রাখার কথা বলা হলেও তা মানছেন না বরিশালের ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা।
গভীর রাত পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রেখে চলছে বেচাকেনা। এক্ষেত্রে ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। সামাজিক দূরত্ব মানছেন না কেউ। লকডাউন কার্যকরে সড়কে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকলেও মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে খুব একটা নজরদারী নেই তাদের। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত একাধিক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হতে দেখা যায়।
বরিশাল নগরীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা ও প্রধান সড়কে ঈদ কেনাকাটায় বের হওয়া মানুষের ঢল। মার্কেট খুলে দেয়ার পর যেন সকলে হুমরি খেয়ে পড়ছেন মার্কেটে। ফুটপাত দখল ও অবৈধ পার্কিংয়ে সড়ক আটকে থাকা গাঁ ঘেষে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই মাস্ক না পরে সামাজিক দূরত্ব অমান্য করেই কেনাকাটা করছেন। এদিকে দোকান ও শপিংমলগুলোর সামনে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ লেখা সংবলিত স্টিকার লাগানো থাকলেও তা শুধুমাত্র প্রশাসনিক ঝামেলা এড়ানোর জন্য। মাস্ক না পরেই বেচাবিক্রি করতে দেখা গেছে দোকান মালিক-কর্মচারীদের।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা সদর রোড, গির্জা মহল্লা, কাটপট্টি, চকবাজার, বাজার রোড, পোর্ট রোড, জেলখানার মোড়, নতুন বাজার, নথুল্লাবাদ, সিএন্ডবি রোড চৌমাথা, বটতলা চৌরাস্তা, বাংলা বাজার, রূপাতলী, লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে সকাল থেকেই জনসমাগম দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর মোড়ে মোড়ে যানজট শুরু হয়ে যায়। নগরীর অধিকাংশ বিপণিবিতানে ঘোষিত ও অঘোষিত মূল্যছাড়ে এসব এলাকায় ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। এতে উপেক্ষিত হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব।
এদিকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রচার প্রচারণা-অভিযান চালালেও নগরবাসী সচেতন হচ্ছে না। বৃহস্পতিবারও বরিশাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুইটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
নগরীর কাউনিয়া থেকে আসা ক্রেতা সাবিনা ইয়াসমিন সন্তান ও বোনকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে আসছেন। অথচ তাদের কারো মুখেই ছিল না মাস্ক। জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরমে মাস্ক পড়ে থাকা কষ্টকর। তবে মার্কেটে এসে জনসমাগম দেখে আসাটা ঠিক হয়নি বলে জানান কাগাশুরা থেকে আসা ক্রেতা সিমা খানম।
বরিশালের ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ মার্কেটে ক্রেতাদের চাপ বেশি স্বীকার করে বলেন, মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটা করতে প্রত্যেক দিন মাইকিং করা হচ্ছে। তবে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে শুক্রবার (৭ মে) বরিশাল জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসন বরিশালের পক্ষ থেকে ২ টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন বরিশালের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত বিশ্বাস দাস এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার। নগরীর চকবাজার, নতুন বাজার, নথুল্লাবাদ, পুলিশ লাইন রোড ও বাংলা বাজার এলাকায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ৯ ব্যাক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানকে নগদ অর্থ জরিমানা করেন।
জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ জানান, আমরা মানুষকে প্রতিনিয়ত সচেতন করছি। মাস্ক বিতরণ করছি, জেল-জরিমানাও করা হচ্ছে। নগরবাসীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রত্যেক দিন ২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।