প্রকাশ: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২১:৩৪
এই পৃথিবীতে সকল অন্যায়, অত্যাচার ও অশান্তির মূলে রয়েছে পথভ্রষ্ট কিছু মানুষ। ক্ষনিকের ক্ষমতার অপব্যবহার, হিংসা ও প্রতিহিংসার পশু প্রবৃত্তিকে উসকিয়ে দিয়ে কিছু মানুষ বিভেদ সৃষ্টি করে নিজেদের মনোতৃপ্তি ও স্বার্থ হাসিলে সদা ব্যস্ত।
তারা হয়তো জানেনা বা ভুলেই যায় ক্ষনিকের এই আত্মতৃপ্তি কখনো চিরস্থায়ী হয়না। আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হোক আর সেই সাথে আস্থা ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হোক মানবকূল এমনটায় কামনা করা উচিত সকলের। নিরবে সহ্য করেছিলাম সবকিছু। নিরবতা মানে দূর্বলতা নয়, হেরে যাওয়া নয়। প্রতিশোধ না নিয়ে তর্কে না জড়িয়ে,
সন্মান নিয়ে ধৈর্য ধারন করে সেখান থেকে সড়ে এসে সৃষ্টিকর্তার সহেযাগিতা চেয়ে তার আনুগত্য প্রকাশ করে সামনে এগিয়ে যাওয়া। দু"টি কথা বহিঃপ্রকাশ করাটাও যেন চলমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বড় ভুল। অনেকের একটি লক্ষ্য থাকে শ্রম ও সুপ্ত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের মনের খোরাক যোগানো। সময়ের প্ররিক্রমায় হয়তো ভুলে যায় গীবতকারীদের প্রবাকান্ডায় ভালো- মন্দের বিচার বিবেচনার মত মেধা শক্তিকে।
কোন মাধ্যমকে নয় ব্যক্তি হিসেবে সত্যের দিশারীদের মনের গহীনে রাখে অগনিত মানুষ। কিন্তু কর্তা যদি তাদের ভালো না বোঝে কাদের দিয়ে তাদের পরিকল্পিত সেক্টরের মঙ্গল হবে আর কাদের দিয়ে ধ্বংস হবে। তাহলে একজন ক্ষুন্দ্র মানব হিসেবে দূরত্ব বজায় রেখে সন্মান নিয়ে বেঁচে থাকায় সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করি।
যে গরুদের জোয়াল ঠিক মত কাঁধে নেয়ার মত বয়স ও অভিজ্ঞতা নেই সেগুলো দিয়ে পরিপূর্ণ হালচাষ হবেনা। নামে মাত্র হবে জমি চাষ। রাতারাতি তেল আর টাকা ঢেলে খ্যাতি বা ক্ষমতার বড়াই দেখানো যায় কিন্তু সেই অর্জন নিভে যায় খুব তারাতারি, যার অনেক প্রমান ধরনীর বুকে আছে ইতিহাস সাক্ষী । দূরের মানুষ গুলো ঠিকিই সন্মান, প্রাপ্যতা ও সম্পর্ক বজায় রাখে প্রতিনিয়ত কিন্তু অনেক সময় বোঝেনা শুধু সেই সব অহংকারী ও কানকথায় নাচনিওয়ালীরা।
আজ অধিকাংশ সেক্টরে ধ্বস নামছে শুধু ভুল সিন্ধান্ত ও কাজের প্রতি একনিষ্ঠজনদের অবহেলা ও তাদের প্রতি বাজে বিরুপ আচরন করে সড়ে দিতে বাধ্য করার কারনে। কত কাছের ও দূরের মানুষকে তাদের কাজ ও পরামর্শ দিয়ে পাশে থেকেছি বড় দীর্ঘশ্বাসের বিষয় নিজের কঠিন সময়ে তেমন করে কোন চোপাবাজদের পাশে পাইনি। সেটা কষ্টের চেয়েও বড় ভাবনায় ফেলেছিল।
শুধু ভেবেছি চারপাশের মানুষের সমস্যা ও সমাধানের চিত্র তুলে ধরি সব সময় কিন্তু নিজের একটু অপ্রত্যাশিত সময়ে কাউকে সঠিকভাবে পাইনি কখনো। আসলে যারা যেখানকার যোগ্য সেখানেই রাখা উচিত ছিল। একটি মানসম্মত সেক্টর হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য।
কিন্তু সেটার প্রাপ্তিটা শেষ বেলাতে দেইনি অবুঝ নিতিনির্ধারকরা। একদিন ঠিকিই বুঝবে কিন্তু সেদিন অনেক দেরি হয়ে যাবে। হয়তো নাও বুঝতে পারে কারন চারপাশে তো তেলবাজদের অভাব নাই তারা সব সময় মহারঙ্গে রাঙ্গিয়ে রাখবে অন্যদিকে ফলাফল তলানিতে নামলেও বুঝতে দিবেনা। হুম জানি অনুতপ্ত বা কৃতজ্ঞতাবোধ যে নেই কারো কারো অন্তরে বিন্দু পরিমান।
সাধক বুঝবে ঠিকিই যখন একতারার তারটি ছিঁড়ে যাবে। সুখী হও অন্যধারার মানব নামের প্রাণীগুলো। দুনিয়া অনেক বড়, সন্মান, সাফল্য, রিজিক,খ্যাতি বা জানমালের দায়িত্ব মহান আল্লাহর। রাজনীতি বুঝি কিন্তু ক্ষনিকের রঙ্গমঞ্চে নোংরা রাজনীতে গা ভাসাতে চাই না। আর সেটাই আমাদের করা উচিত। ক্ষণজন্মা জীবনের পরতে পরতে সাফল্য, ব্যর্থতা দুটোই আছে।
ভেঙে পড়িনি কখনো। মনোবল হারাইনি। চলার এই পিচ্ছিল পথে অনেক কিছুই হারিয়েছি। অপ্রত্যাশিতভাবে ঠকেছি,প্রতারিত হয়েছি বার বার । অতঃপর দূর থেকে নিন্দুকদের অট্টহাসি অনুধাবন করতে দেখেছি। তবে ভালো থাকুক সেই ক্ষনিক তৃপ্তির মানব নামের প্রাণীগুলো। শত্রুতা থাকবে। ঈর্ষাকাতর প্রাণীগুলো পিছু লেগে থাকবে। কিন্তু দমে যাইনি।
দমে যাওয়ার জন্য তো আসিনি নশ্বর ধরনীতে। ছেঁড়া প্যান্ট, একজোড়া পুরোনো জুতো, ব্যালেন্সহীন একাউন্ট, আবেগের তাড়নায় একরাশ হতাশাকে নিয়েই বিলিয়ে দেবো নিজেকে একটি সুন্দর ও আগামী বির্নিমানে। আমার চেয়েও তো কঠিন খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে রাস্তা কিম্বা রেলস্টেশনের বারান্দায় কত অসহায় মানুষ। তাদের চেয়ে তো শতগুনে ভালো রেখেছেন ওই মাবুদ।
হ্যাঁ বাঁধা আসবে। আসুক। ভালোকে নিয়ে মন্দকে প্রতিহত করে যাওয়ার চেষ্টা করবো অবিরত। তবুও অপ্রাপ্তি,আবেগ,হতাশা,ভর করবে মনের গহীন কোনে, জীবনটা তো এমনই। তবুও ভালো আছি বলেই একটু হাঁসিতে পরিপন্ন থাকার আপ্রাণ অভিনয় চলছে,চলেবেই। চির বাস্তব হচ্ছে অদ্ভুত এই পৃথিবীতে প্রকৃতপক্ষে সবাই দু:খি। কিন্তু মানুষ প্রতিনিয়ত ক্ষনিকের সুখের আশায় গহীনের কষ্টগুলোকে সাময়িকভাবে লাঘব করে রাখার চেষ্টায় বিভোর।
যাকে আমরা আনন্দ বলে থাকি। কিন্তু আমরা ভুলেই যাই আজব এই জেলখানায় বসে ক্ষনজন্মা জীবনে এ আনন্দের মহা তৃপ্তি নেই। চির সত্য হচ্ছে এক মহাকালের মুক্তির দীর্ঘ অপেক্ষা। কেউ মানতে পারে আবার কেউ মহা-মায়ার ধরনীর টানে মেনে নিতে পারেনা এ বাস্তবতাকে।
রিফাত হোসাইন সবুজ
যুগ্ম সাধারন সম্পাদক
জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন, নওগাঁ।