ইস্তাম্বুলে বিষাক্ত মদপানে ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ১৫ই জানুয়ারী ২০২৫ ১২:০৭ অপরাহ্ন
ইস্তাম্বুলে বিষাক্ত মদপানে ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনের মৃত্যু

তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে বিষাক্ত মদপানের কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এই তথ্য জানিয়েছে। গত সোমবার (১৪ জানুয়ারি) শহরের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩৮ জনের মধ্যে ১১ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 


ইস্তাম্বুলের কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বিষাক্ত মদের উৎস খুঁজে বের করতে তদন্ত চালাচ্ছে। মদের মধ্যে মিথানল থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা একটি বিষাক্ত পদার্থ এবং মদের শক্তি বাড়ানোর জন্য সাধারণত এতে যোগ করা হয়। মিথানল মদ পান করলে অন্ধত্ব, লিভারের ক্ষতি এবং মৃত্যু ঘটতে পারে। 


এছাড়াও, ২০২৪ সালে গত বছরও একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটে, যেখানে ১১০ জন বিষাক্ত মদপান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে ৪৮ জন মারা যান। ইস্তাম্বুল গভর্নরেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এসব ঘটনা দেশের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। 


সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মৃতদের মধ্যে ২৬ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই তুরস্কে পর্যটক হিসেবে এসেছিলেন এবং স্থানীয় মদ পান করেছিলেন। ৩৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে যাদের চিকিৎসা চলছে, তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন। 


সরকার জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং বিষাক্ত মদ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। তুরস্কের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে বিষাক্ত মদ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা নিয়েছে। 


এই ঘটনাটি তুরস্কে মদ ব্যবহারের নিরাপত্তা সম্পর্কে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কর্তৃপক্ষ মিথানলের অপব্যবহার বন্ধ করতে আইন কঠোর করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। 


তবে বিষাক্ত মদপানে মৃত্যুর ঘটনাগুলো বেশ কয়েক বছর ধরেই ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মিথানল মদ প্রস্তুতকারকদের কাছে একটি জনপ্রিয় উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা তাদের মদের তীব্রতা বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। 


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মিথানলের বিষাক্ত প্রভাব সম্পর্কে বহুবার সতর্কতা প্রকাশ করেছে এবং তুরস্ক সরকার এখন তাতে আরও বেশি মনোযোগী হচ্ছে। 


তবে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি মিথানল মদ তৈরির চক্র ধ্বংস করার জন্য কাজ করছে এবং আশা করছে, ভবিষ্যতে এমন ধরনের দুর্ঘটনা কমে যাবে। 


এমনকি ইস্তাম্বুলের প্রশাসন ২০২৪ সালে এ ধরনের আরও অনেক ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যাতে ভবিষ্যতে মানুষের জীবন রক্ষা করা যায়।