নোয়াখালীর ইউপি চেয়ারম্যানকে ঢাকায় আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক
গিয়াস উদ্দিন রনি- জেলা প্রতিনিধি , নোয়াখালী
প্রকাশিত: সোমবার ২৫শে নভেম্বর ২০২৪ ১১:২১ পূর্বাহ্ন
নোয়াখালীর ইউপি চেয়ারম্যানকে ঢাকায় আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতা আবদুল মতিন তোতা হত্যার ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ একটি মোড় নেয়। তোতা হত্যা মামলার প্রধান আসামি, চরএলাহী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাককে গতকাল (২৪ নভেম্বর) রাতে ঢাকার ভাটারা থানা এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় তাকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।


স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৭ আগস্ট বিএনপি নেতা তোতাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়, এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। এ হত্যাকাণ্ডে রাজ্জাক চেয়ারম্যানের নাম উঠলে, তিনি গা ঢাকা দেন। তবে সম্প্রতি নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার এক বাসিন্দা ঢাকায় রাজ্জাকের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হন। খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে, এবং তার পরপরই তারা ভাটারা থানা এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে রাজ্জাককে আটকে মারধর করে। এরপর তারা পুলিশকে খবর দেয়। 


কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, "রাজ্জাককে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আমরা খবর পেয়ে ভাটারা থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কোম্পানীগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে তোতা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।"


এদিকে, নিহত বিএনপি নেতার পরিবারের সদস্যরা এবং এলাকাবাসী রাজ্জাকের ফাঁসির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশও করেছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজ্জাক চেয়ারম্যানের একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আরও ব্যাপক প্রতিবাদ জানাচ্ছে। 


রাজ্জাক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ওঠার পর, স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিহত তোতা পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড এবং নির্দেশদাতা ছিলেন রাজ্জাক। তাদের অভিযোগ, রাজ্জাকের নেতৃতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতা তোতাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। 


এ ঘটনার পর থেকে কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে সারা জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন থেকে। 


এখন দেখা যাক, মামলার তদন্ত ও রাজ্জাকের গ্রেপ্তার পরবর্তী বিচার প্রক্রিয়া কেমন গতিতে এগোতে পারে।