রসুন চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে লালপুরের কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ আশিকুর রহমান টুটুল, জেলা প্রতিনিধি, নাটোর
প্রকাশিত: রবিবার ২৩শে জানুয়ারী ২০২২ ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
রসুন চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে লালপুরের কৃষকরা

গত কয়েক বছর যাবত নাটোরের লালপুরে ব্যাপক ভাবে চাষ হয়ে আসছে বিনা হালে রসুনের। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় হয়েছে বাম্পার ফলনও। তবে দুই বছর যাবত উৎপাদিত রসুনের বাজারে কাঙ্খিত দাম না থাকায় এবার রসুন চাষে আগ্রহ কমেছে এই অঞ্চলের চাষীদের। 

উপজেলা কৃষি অফিস বলছে,‘গত বছর এই উপজেলায় ১হাজার ৫শত ১০ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হলেও চলতি মৌসুমে চাষ হয়েছে ১২শত ৩৫ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে ২শত ৭৫ হেক্টর কম জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে।’


স্থানীয় রসুন চাষী হসিবুল ইসলাম জানায়,‘লাভের আশায় আমি চওড়া সুধে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে রসুনের চাষবাদ করে আসছি। কিন্তু গত দুই বছর যাবত বাজারে রসুনের সঠিক দাম পাই নাই। এবারও শেষ পর্র্যন্ত ৪শত টাকা মনে একমন রসুন বিক্রয় করতে হয়েছে। অনেক কৃষক তাদের রসুন বিক্রয় করতে না পেরে ফেলে দিয়েছেন। যে টাকা খরচ করে আমরা রসুন চাষ করি যদি রসুন বিক্রয় করে সেই টাকাই না হয় তাহলে রসুন চাষ করে কি লাভ। তাই এই বছর রসুনের চাষ না করে  গমের চাষ করেছি।’


আজিবর রহমান নামের এক রসুন চাষি বলেন,‘রসুনের দাম না থাকায় গত বছরের রসুন এখনও ঘরে পড়ে আছে। অনেক টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। সারের দোকানে বাঁকি আছে। হালখাতার কার্ড দিয়েছে। কি করে হালখাতা করবো। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রসুন লাগিয়েছিলাম। এখনো এনজিওর ঋণ শোধ করতে পারি নাই। প্রতি সপ্তাহে এনজিওর লোক বাড়িতে আসে। তাই এবার আর রসুন লাগাই নাই।’


উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গত কয়েক বছর যাবত এই উপজেলায় ব্যাপক হারে রসুনের চাষ হয়েছে। তবে উৎপাদিত রসুনের বাজারে সঠিক দাম না থাকায় এবার রসুনের চাষ কিছুটা কমেছে। রসুনের সঠিক দাম পেলে আগামিতে এই উপজেলায় আবারও রসুনের চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।’


তবে স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, ‘রসুন একটি স্বল্প মেয়াদি লাভজনক ফসল। লালপুরের আবহাওয়া রসুন চাষের জন্য অনকুল। সরকার যদি বিদেশ থেকে রসুন আমদানি না করে সঠিক দামে কৃষকদের থেকে রসুন ক্রয় করেন তাহলে এই অঞ্চলে রসুনের চাষ করে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে মনে করেন রসুন চাষীরা।’