প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১২:২৬
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি গত বৃহস্পতিবার রাতে স্থলভাগে উঠে এসেছে। এটি এখন স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে এবং ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, এর প্রভাব আজ শুক্রবার সারা দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকবে এবং আগামীকাল শনিবারও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি গতকাল রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরা ও তার আশপাশে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে এটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এখন এটি ধীরে ধীরে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগোচ্ছে এবং দেশজুড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক এলাকায় বৃষ্টি প্রবল হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ এ কে এম নাজমুল হক জানান, নিম্নচাপটি এখনও সক্রিয় এবং দেশের উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আজ থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অংশে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঢাকায় আজ সকাল থেকে মেঘলা আকাশ ও ঝিরঝির বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে এবং সারাদিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
পরবর্তী দিন, অর্থাৎ শনিবার, রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই বৃষ্টি প্রধানত সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা পরদিন বুধবার সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপান্তরিত হয়। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে তা নিম্নচাপ ও পরবর্তীতে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। গতকাল নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে সর্বোচ্চ ১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা উল্লেখযোগ্য। ঢাকাতেও ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, যা জনজীবনে অসুবিধা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারবন্দী নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। ভোলা ও পটুয়াখালীর কয়েকটি এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে বহু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, যার ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দারা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
আসন্ন দিনের জন্য দেশের জনসাধারণকে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নদীর নিকটে থাকা মানুষদের নদীর পানির উচ্চতা ও বৃষ্টিপাতের ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।