আবু সাঈদ হত্যাকান্ড: অভিযুক্ত ৭১ জনের শাস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ৫ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:৫১ অপরাহ্ন
আবু সাঈদ হত্যাকান্ড: অভিযুক্ত ৭১ জনের শাস্তি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৭১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


সিন্ডিকেট সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী জানান, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ঘটনাবলীর তদন্তে ৭২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় ২৩ শিক্ষার্থীকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, ৩৩ শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার এবং ১৫ জনের পড়াশোনা শেষ হয়ে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


উপাচার্য আরও বলেন, "তদন্তে এক শিক্ষার্থী নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তার অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"


সিন্ডিকেট সভায় আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

১. ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের সমিতি বা ইউনিয়নের নির্বাচন হবে না।

২. ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় কোনো ছাত্রসংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি আয়োজন করলে ব্যবস্থা নেওয়ার নীতিমালা গৃহীত হয়েছে।


উপাচার্য বলেন, "শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।"


জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনায় পুরো দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহিংসতা, নির্যাতন ও বিশৃঙ্খলা এ ঘটনায় নতুন মাত্রা পায়। তদন্ত কমিটি এসব অভিযোগের বিস্তারিত তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে।


এ সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এক পক্ষ মনে করে, দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত। অপরদিকে, আরেক পক্ষ বলছে, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কঠোর এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হতে পারে।


বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশা করছে, এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে। লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হবে।