আজ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: শুক্রবার ১লা নভেম্বর ২০১৯ ১২:৩৯ অপরাহ্ন
আজ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু

পহেলা নভেম্বর থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সমুদ্রপথে চলাচলে অনুমতি পেয়েছে পর্যটকবাহী তিনটি জাহাজ। বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গার মাঝে সেন্টমার্টিন দ্বীপ অন্যতম। এটি কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে নয় কিলোমিটার দক্ষিণে নাফ নদীর মোহনায় এ দ্বীপটি। সেন্টমার্টিন দ্বীপটি নারকেল জিঞ্জিরা হিসেবে পরিচিত। প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে এর নামকরণ করা হয়েছে অনেক আগেই। আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার।তীর বাঁধা নৌকা,নান্দনিক নারিকেল গাছের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে মৃদু পবনের কোমল স্পর্শ এটি বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস। বালি, পাথর, স্বচ্ছ পানির জেলি ফিশ, হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ  যেন মনে হয় রহস্যময় জীবন্ত পাঠশালায় পরিণত এই সেন্টমার্টিন।

চলে এসেছে শীত মৌসুম সেন্টমার্টিন ভ্রমনের জন্য এটাই সবথেকে উপযোগী সময়।কারন শীত মৌসুমে সমুদ্র থাকে শান্ত এবং গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমে সমুদ্র থাকে উত্তাল তাই তখন চলাচল ঝঁকিপূর্ণ।এবং জাহাজ গুলো মার্চ মাসের মাঝা মাঝি সময় থেকে নবেম্বর পর্যন্ত চলাচল বন্ধ রাখা হয় যাতে দুর্ঘটনার কবলে কোনো জাহাজ কিংবা ভ্রমণকারীরা না পড়েন। পহেলা নবেম্বর থেকে টেকনাফ হতে সেন্টর্মাটিন সমুদ্রপথে চলাচলের অনুমতি পেয়েছে পর্যটকবাহী  তিনটি জাহাজ, কেয়ারি সেন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রোজ এন্ড ডাইন এবং দ্যা আটলান্টিকা।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন তাদের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন। অবশ্যই রর আগে এই তিনটি জাজাহ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহ্ন (বিআইডাব্লিউটএ) চট্রগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয় থেকে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। সেন্টমার্টিন রাতে থাকার জন্য রয়েছে বেশ কিছু উন্নতমানের কয়েকটি হোটেল ও কটেজ।এছাড়া রয়েছে পর্যটকদের জন্য সুব্যবস্থা। যেমন, লেখক হুমায়ূন আহামদের বাড়ি সমুদ্রবিলাস, সীমানা পেরিয়ে, প্রিন্স হেভেন। ভ্রমন সবারেই প্রিয় ভাল লাগার যায়গা পেলে কোনো কিছুর খবর থাকেনা হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে ওই ভ্রমনকৃত যায়গার সাথে। তাই অনন্দের পাশাপাশি আচারণগত সচেতন ও পরিবেশগত ভাবে সচেতন থাকতে হবে।আর কোনো  ভাবে পরিবেশ নষ্ট করা যাবেনা সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে।

আচারণগত সচেতনতা 
*লক্ষ রাখবেন, যারা রাতে অন্ধকারে আড্ডা দিচ্ছে আপনার আলো যেন তাদের বিরক্তির কারন না হয়।
*স্থানীয় অধিবাসী বা তাদের বাড়ির ছবি তোলার ক্ষেত্রে অনুমতি নিন। তারা হয়তো আপনাকে কিছু বলবেনা।কিন্তু আপনার প্রতি খারাপ ধারিনা তৈরি হবে।
পরিবেশগত সচেতনতা
*প্রবাল উত্তোলন, কেনা/বেচা সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, প্রবাল, শামুক, ঝিনুক, ক্রয় না করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
*সামুদ্রিক কাছিম বিপন্ন প্রাণী, তাই এদের সংরক্ষণ করা জরুরী। সেন্টমার্টিন সৈকত হল সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার স্থান। কারন শীতকাল এদের ডিম পাড়ার মৌসুম। রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো ও হৈচৈ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক প্রটোকল ও দেশীয় আইন অনুযায়ী কাছিম ধরা, মারা, ডিম সংগ্রহ ও বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ।
*বীচে হাটার সময় কাকড়ার আবাসের দিকে লক্ষ রাখবেন।যেন আপনি তাদের আবাসস্থলের জন্য ক্ষতি কারণ না হোন।
*কেয়া ফল ছিড়বেন না।
*সেন্টমার্টিন প্রাকৃতিক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। প্লাস্টিক, কাঁচ সহ যে সমস্ত বস্ত মাটিতে সহজে পচে না, তাই যেখানে সেখানে ফেলবেন না।

সেন্টমার্টিনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি সতর্কীকরণ নির্দেশনা নিম্নরূপঃ
*সমুদ্র স্থানের পূর্বে জোয়াএ ভাটার সময় জেনে নিন।
*এক হাটু পানির নিচে না নামাই শ্রেয়।
*পানিতে নেমে উত্তেজনার বিসে তীর হতে দূরে যাবেন না।
*প্রাপ্ত বয়স্কদের অনুপস্থিতিতে ছোট ছোট বাচ্ছা পানিতে নামা নিষেধ।
*সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না।
*একা একা কখনই পানিতে নামবেন না।
*নৌ যান চলাচল কালে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করুন।
*মনে রাখবেন আপনার জীবনের নিরাপত্তা আমাকেই নিশ্চিত করতে হবে

ইনিউজ ৭১/এম.আর