প্রায় ২৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। মঙ্গলবার রাতে বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়। বুধবার দুপুরে তাকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদক পরিচালক আব্দুল মাজেদের নেতৃত্বে এই গ্রেফতার অভিযান পরিচালিত হয়।
গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের বিরুদ্ধে গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের করে দুদক। সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তার নামে ও পারিবারিক ব্যয়ের হিসাবে ৮১ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, যেখানে বৈধ আয় মাত্র ৫৩ কোটি টাকা। এর ফলে ২৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের সঙ্গে তিনি জড়িত। ২০২৩ সাল থেকেই এই বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়। তার আর্থিক লেনদেন ও সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখে দুদক নিশ্চিত হয়েছে যে, তিনি অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, সরকারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ লেনদেন এবং বিদেশে অর্থ পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে এসব অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা মামলার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
এর আগে দুর্নীতির অভিযোগে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে দুদক। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের আর্থিক লেনদেন ও সম্পদের তথ্য যাচাইয়ে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতারের পর তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তার সম্পদের বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হতে পারে।
এই ঘটনার পর ব্যবসায়ী মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এটিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কিছু ব্যবসায়ীকে টার্গেট করা হচ্ছে। তবে দুদক বলছে, তারা নিরপেক্ষভাবে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।