নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায় বাঁ ও ডান হাত ছাড়াও পায়ের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করেছেন দেশের পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ। ইসি সূত্র জানায়, বর্তমানে তাদের ডেটাবেইজে ৫ লাখ ৩০ হাজার ২৫৮ জন দ্বৈত ভোটার রয়েছেন। অর্থাৎ, এই সংখ্যার প্রত্যেকে দুটি করে এনআইডি নিয়েছেন, যা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন লঙ্ঘন।
ইসির সচিব শফিউল আজিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আইন অনুযায়ী, একজন নাগরিক শুধুমাত্র একটি এনআইডি পাবেন, এবং যারা একাধিক এনআইডি গ্রহণ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে ডা. সাবরিনা শারমিন ও সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ ও তোফায়েল আহমেদের নাম রয়েছে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন অনুযায়ী, কেউ জেনে বুঝে একাধিক এনআইডি নিলে এক বছরের কারাদণ্ড বা ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। পাশাপাশি, এনআইডি জালিয়াতির অভিযোগে শাস্তির বিধানও রয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের আগে অধিকাংশ দ্বৈত এনআইডির ঘটনা ঘটেছে।
ইসির তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এক ব্যক্তির আঙুলের ছাপ অন্য ব্যক্তির দেওয়ার, ডানের বদলে বামের ছাপ দেয়ার, এমনকি পায়ের আঙুলের ছাপ ব্যবহারের কারসাজি হয়েছে। এসব ঘটনার পেছনে নির্বাচন কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ রয়েছে। তবে ইসি এ দায় দায়িত্বহীনভাবে ডেটা অ্যান্ট্রি অপারেটরদের ওপর চাপাতে চায়।
ইসির সচিব জানান, একাধিক এনআইডি বন্ধ করতে এবং কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ঠেকাতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া, একাধিক এনআইডি থাকলে নাগরিকদের নিজ উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে আবেদন করতে হবে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটি অবশ্যই নির্বাচন কমিশনকে সমাধান করতে হবে, এবং তাদের একাধিক এনআইডি নিয়ে শুনানি করারও পরামর্শ দেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।