মাদারীপুর শহরের পুরান বাজারে অবস্থিত সিটি সুপার মার্কেটে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ভোর রাত তিনটার দিকে হঠাৎ করে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনে মার্কেটের অন্তত ২৫টি দোকান এবং পাশের তিনটি টিনের ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা। আগুন লাগার খবর পেয়ে মাদারীপুর, রাজৈর, কালকিনি ও শরীয়তপুর থেকে মোট ছয়টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে, তবে ক্ষয়ক্ষতি এতটাই ব্যাপক যে অনেক ব্যবসায়ীর সবকিছুই পুড়ে গেছে।
পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে ছিল ১০টি কসমেটিকসের দোকান, ৭টি ব্যাগের দোকান, একটি কম্পিউটার দোকান, একটি কনফেকশনারী, ৩টি হার্ডওয়্যার দোকান এবং তিনটি গোডাউন। এই মার্কেটে থাকা ব্যবসায়ীরা বছরের সঞ্চিত মালামাল নিয়ে রমজান মাস ও ঈদকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, যার পুরোটাই শেষ হয়ে গেছে আগুনের লেলিহান শিখায়।
এছাড়া মার্কেটের ঠিক পেছনের তিনটি টিনের বসতঘরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং সেগুলোর বাসিন্দারা দ্রুত ঘর ছেড়ে নিরাপদে বেরিয়ে এলেও ঘরের আসবাব ও অন্যান্য মালামাল রক্ষা করতে পারেননি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন পার করছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক আবুল হোসেন জানান, তার দোকানে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল ছিল, যার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। একইভাবে অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও দাবী করছেন, তাদের ঈদের জন্য তোলা পণ্য এবং নগদ টাকাসহ সবকিছু আগুনে পুড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা সুমিত মণ্ডল বলেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় সাত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি জানান। তবে কেউ হতাহত না হওয়ায় বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো গেছে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের সহযোগিতার জন্য একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি সহায়তা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মার্কেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পরিদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।