পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন হামলার শিকার হয়েছে এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) সেটি হাইজ্যাক করার দাবি করেছে। কোয়েটা থেকে রাওয়ালপিন্ডিগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালিয়ে বন্দুকধারীরা সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ট্রেনটিতে সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন।
বিএলএ মুখপাত্র জিয়ান্দ বেলুচ হুমকি দিয়েছেন, যদি পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বা পুলিশ অভিযান চালানোর চেষ্টা করে, তাহলে সব যাত্রীকে হত্যা করা হবে। তিনি দাবি করেছেন, অভিযানে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ছয় সদস্য নিহত হয়েছে এবং কয়েকশ যাত্রী তাদের জিম্মায় রয়েছে। সংগঠনটি পুরো ঘটনার দায় স্বীকার করেছে এবং সামরিক অভিযান হলে পাল্টা প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রেনটির ৯টি বগিতে ৪৫০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। ট্রেনটি কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশে যাত্রা করছিল, তখনই এটি সশস্ত্র হামলার শিকার হয়। হামলার পরপরই ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বন্দুকধারীরা, ফলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াইরত সশস্ত্র গোষ্ঠী বিএলএ আগেও এমন হামলা চালিয়েছে। তারা পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে হামলা চালিয়ে আসছে এবং এই হামলাও তাদের স্বাধীনতার আন্দোলনের অংশ বলে দাবি করেছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোয়েটার সিবি হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী ও অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। তবে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হুমকি ও যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, উদ্ধার অভিযান চালানোর আগে সব ধরনের সম্ভাব্য কৌশল বিবেচনা করা হবে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বেলুচিস্তানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সক্রিয়তা বাড়ছে এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই হামলার মাধ্যমে তারা নিজেদের শক্তি ও সক্ষমতা দেখাতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, দেশটির জনগণের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। যাত্রীদের পরিবার ও স্বজনরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। পাকিস্তানের সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দিলেও এখনো কোনো সফল অভিযান পরিচালিত হয়নি। উদ্ধার তৎপরতা কখন শুরু হবে, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।