পবিত্র রমজানের শেষ শুক্রবারকে বলা হয় জুমাতুল বিদা। এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটি রোজাদারদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে মহিমান্বিত এ মাস বিদায়ের পথে। তাই দিনটির যথাযথ মূল্যায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জুমাতুল বিদা উপলক্ষে মুসল্লিরা মসজিদে বিশেষ ইবাদত ও দোয়ায় মশগুল থাকেন।
জুমার দিনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, এটি সপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়, জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি কেয়ামতও এই দিনে সংঘটিত হবে। তাই এ দিনের ফজিলত অনস্বীকার্য।
জুমাতুল বিদা শুধু একটি জুমার দিন নয়, এটি রমজানের বিদায়ের বার্তা নিয়ে আসে। এ দিন রোজাদাররা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় দোয়া করেন এবং নিজেদের গুনাহ থেকে মুক্তির প্রার্থনা করেন। নবিজি (সা.) বলেছেন, জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে যখন আল্লাহর দরবারে দোয়া কবুল হয়। রমজানের শেষ জুমায় এই সুযোগ আরও বিশেষভাবে প্রসারিত হয়।
ঐতিহাসিকভাবে এ দিনটি অনেক গুরুত্ব বহন করে। হজরত সুলায়মান (আ.) এই দিনে জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা মসজিদ আল-আকসা নির্মাণ করেন বলে জানা যায়। এ কারণে সারা বিশ্বের মুসলিমরা রমজানের শেষ শুক্রবার ‘আল কুদস’ দিবস হিসেবে পালন করেন।
দেশের বিভিন্ন মসজিদে জুমাতুল বিদার জামাতে হাজারো মুসল্লি অংশ নেন। বিশেষ করে বড় মসজিদগুলোতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লিরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। মুসল্লিরা মনে করেন, এ দিনের দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
রমজানজুড়ে প্রতিদিন ইফতারের পূর্বে আল্লাহ ৭০ হাজার গুনাহগারকে ক্ষমা করেন। কিন্তু জুমাতুল বিদার দিন সেই সংখ্যক ব্যক্তিকে একসাথে ক্ষমা করা হয় বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। তাই এ দিনটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
রমজানের প্রধান শিক্ষা হলো তাকওয়া অর্জন। এই মাস আমাদের শেখায় কীভাবে গুনাহ থেকে দূরে থাকতে হয়। রমজানের পরও যদি আমরা খোদাভীতি বজায় রাখি, তবে আমাদের জীবন আলোকিত হবে। আল্লাহর বিধান মেনে চললে আমরা সফলতা অর্জন করতে পারবো।
জুমাতুল বিদার দিনে আমাদের উচিত, আল্লাহর কাছে তওবা করা, অতীতের গুনাহ মাফ চাওয়া এবং ভবিষ্যতে সৎপথে চলার অঙ্গীকার করা। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন এবং জান্নাতের পথে পরিচালিত করুন। আমিন।