গুলিতে মৃত্যু: ১১ বছর পর জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মির লাশ উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
গিয়াস উদ্দিন রনি- জেলা প্রতিনিধি , নোয়াখালী
প্রকাশিত: সোমবার ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৪৭ অপরাহ্ন
গুলিতে মৃত্যু: ১১ বছর পর জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মির লাশ উত্তোলন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে ১১ বছর পর জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মির লাশ (হাড়গোড়) উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নর ৩নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার নতুন বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান, রামপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের করিম উল্লাহ মাঝি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান ও চরকাঁকড়া ১নম্বর ওয়ার্ডের কমর উদ্দিন বেপারী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশগুলো উত্তোলন করা হয়।


উত্তোলন করা সাবেক জামায়াত-শিবিরের কর্মিরা হলেন, উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল আজিজ ওরফে রায়হান (১৮), রামপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের নুর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের ছেলে সাইফুল বাবলু (২০)। এদের মধ্যে সাইফুল বামনী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী, রায়হান বসুরহাট দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী এবং বাবলু পেশায় একজন রং মিস্ত্রি ছিলেন।


স্বজনদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে আজ মরদেহ উত্তোলন করা হয়। সকাল ১০টায় রায়হান, দুপুর ৩টায় সাইফুল এবং বিকেল ৫টায় বাবলুর মরদেহ উত্তোলন হয়। পরে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তীর এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মঈনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।


বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোশাররফ হোসাইন জানান, ১১ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডের মামলার আবেদন করায় তাদের পরিবারের দাবি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনের আসামিদের আইনের আওতায় আনা হোক।


কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মির মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। এর আগে, ১০ ডিসেম্বর বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ন হাজী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে আরেক শিবির কর্মি মতিউর রহমান সজীবের লাশও উত্তোলন করা হয়।


উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে কোম্পানীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল হয়। পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং জামায়াত-শিবিরের সাতজন নেতা-কর্মি নিহত হন। এর মধ্যে তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়, বাকি চারজনের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়। পরে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়।