আশুলিয়ায় লাশ পুড়িয়ে দেওয়া ‘মাস্টারমাইন্ড’ ওসি সায়েদ গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নেছার উদ্দিন খান, স্টাফ রিপোর্টার, সাভার:
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন
আশুলিয়ায় লাশ পুড়িয়ে দেওয়া ‘মাস্টারমাইন্ড’ ওসি সায়েদ গ্রেফতার

আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঘটে যাওয়া এক নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত, তৎকালীন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকায় আনা হয় এবং বর্তমানে শাহবাগ থানায় রাখা হয়েছে।


এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ৫ আগস্ট, যখন শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। সেদিন ছাত্র আন্দোলনের সময় ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং পরে লাশ পুড়িয়ে ফেলার shocking ভিডিওগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা দেশে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করে।


প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এ এফ এম সায়েদ সেদিন সিভিল ড্রেসে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তার পোশাকের মধ্যে ছিল নীল রঙের পোলো শার্ট এবং কালো ট্রাউজার। আহতের মতো দেখাতে একটি হাতের ব্যান্ডেজও ছিল তার। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় সায়েদ লাশগুলো পোড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং স্থানীয় পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে পেট্রোল সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন। 


জানা গেছে, আশুলিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপপরিদর্শক আরাফাত উদ্দিন ও সহকারী উপপরিদর্শক মনিরের সহযোগিতায় মরদেহগুলোতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়। তারা প্লাস্টিকের বোতলে করে পেট্রোল নিয়ে আসেন এবং তিন দফায় লাশগুলোতে এটি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা সায়েদের নির্দেশনাকে পুরোপুরি মান্য করেছিলেন।


এখন সায়েদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে এবং তাকে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে হাজির করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ২০০৬ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদানকারী সায়েদের এই ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ সংযোগ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। 


সামাজিক নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের প্রতি এই ঘটনাটি নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এবং দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপে দেশের জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে।