বরিশালে মেয়র খোকনের দায়িত্ব গ্রহণের পরই দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৪ই নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৪ অপরাহ্ন
বরিশালে মেয়র খোকনের দায়িত্ব গ্রহণের পরই দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নতুন মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) এর অভিষেকের দিনেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে দুটি গ্রুপ। সোমবার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই মেয়র সমর্থিত রুপাতলীর মোল্লাবাহিনী এক ভয়াত্মক রুপ ধারণ করে। কথিত শ্রমিক নেতা সুমন মোল্লার ভাই মিলন মোল্লা দলবল নিয়ে ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদের স্বজন এক যুবককে এলোপাতারি কুপিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 


নতুন মেয়রের দায়িত্বগ্রহণের প্রথমদিনেই সংঘটিত এই রক্তারক্তির ঘটনা পুরো শহরময় আলোচনা-সমালোচনা তৈরি করেছে। পাশাপাশি জনমনে বাড়িয়ে তুলেছে আতঙ্ক। জানা গেছে, মোল্লাবাহিনীর হামলায় রক্তাক্ত ওই যুবকের নাম পিয়াল। তারা উভয়ে বরিশাল সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী।


বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার এসআই আরাফাত জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই উভয়গ্রুপের সদস্যরা সটকে পড়ে। ফলে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। 




কাউন্সিলর সুলতান জানান, নতুন মেয়র এবং তিনিসহ পরিষদের সদস্যরা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে দায়িত্বগ্রহণ শেষ করে রুপাতলী ফিরে আসার পর সুমন মোল্লার ভাই মিরন মোল্লা ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল নিয়ে পিয়ালকে তার বাসার সামনে মোল্লা মার্কেটে বসে কুপিয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় পিয়ালকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।


অভিযুক্ত সুমন মোল্লা জানান, মেয়রের অভিষেক আয়োজনে কাউন্সিলর সুলতানের লোকজনের অপেক্ষা তার কর্মীবাহিনী বেশি অংশ নেন, যা দেখে তিনি সংক্ষুব্ধ হন। অনুষ্ঠান শেষে তিনি মাহিন্দ্রা স্ট্যান্ডটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সন্ত্রাসীদের পাঠিয়ে দেন। তখন তাদের সাথে শ্রমিকদের সংঘাত হয় এবং এতে তার পক্ষের অন্তত ১০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এছাড়া খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাকেও পেটানো হয়, দাবি করেন সুমন মোল্লা।


তবে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, রুপাতলীর এই সংঘাতের নেপথ্যে মাহিন্দ্রার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সুলতান মোল্লা এবং সুমনের মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে চলমান বিরোধের বিষয়টি সামনে এসেছে। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে আজকের রক্তপাতের ঘটনা ঘটল, যার কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয় নতুন মেয়র খোকনের দায়িত্বগ্রহণ অনুষ্ঠান।


এদিকে নতুন মেয়র খোকনের অভিষেকের দিনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপের সংঘাতকে রক্তারক্তির আলামত হিসেবে অভিহিত করেছে দলীয় ঘরনার রাজনৈতিক একটি পক্ষ। বিশেষ করে সাবেক মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগামীতে প্রতিমন্ত্রী-মেয়র সমর্থিতরা বড় কোনো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়বে কী না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। 


আর সাদিক অনুসারীদের এমন ভাবনা একদম উড়িয়ে দিলে চলবে না, মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। তাদের মতে মেয়রের অভিষেকের প্রথমদিনেই দুটি গ্রুপ সংঘাতে জড়িয়ে যে অঘটনের জন্ম দিলো তা প্রতিমন্ত্রী-মেয়রের রাজনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলবে। সেক্ষেত্রে এসব বিষয় মাথায় রেখে প্রতিমন্ত্রী-মেয়রকে কঠোর ভুমিকায় যেতে হবে, মন্তব্য করেন তারা।