কালকিনিতে মৎস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ আতিকুর রহমান আজাদ,উপজেলা প্রতিনিধি কালকিনি (মাদারীপুর)
প্রকাশিত: শুক্রবার ২রা জুন ২০২৩ ০৭:১২ অপরাহ্ন
কালকিনিতে মৎস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ!

জেলেদের মাঝে বিশেষ ভিজিএফের চাল বিতরণে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তালিকা তৈরী ও ছাগল বিতরণসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদারের বিরুদ্ধে। এছাড়া নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে প্রায় ৬ বছর ধরে একই উপজেলায় চাকুরি করার সুবাদে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম করার সুযোগ পাচ্ছেন বলে এলাকায় অভিযোগ রয়েছে। 


মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদার গত ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর কালকিনিতে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। একইস্থানে কোনো কর্মকর্তা তিন বছরের বেশি সময় চাকরি করার বিধান না থাকলেও তিনি নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে ওপর মহলকে ম্যানেজ করে প্রায় ৬ বছর ধরে একই উপজেলায় দায়িত্ব পালন করে আসছেন।


এর আগে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে নিষিদ্ধ সময় ইলিশ মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে জেলেদের মানবিক সহায়তায় আর্থিক সুবিধা নিয়ে প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে জেলে নয় এমন লোকদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন এই কর্মকর্তা। এছাড়াও শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে ছাগল ও ছাগলের জন্য ঘর বিতরণের ঘটনায় ব্যাপক অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছে মৎস্যজিবীরা। 


এ ছাড়া ছাগলের ঘর তৈরিতে নিন্মমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। রোগাক্রান্ত ছাগল হওয়ায় কারণে বিতরণের কয়েকদিন পরে চর দৌলতখান ইউনিয়নে ৫জন উপকারভোগীর ১০টি সহ বেশ কয়েকটি ছাগল মারা যায়। রোগাক্রান্ত ছাগলের চিকিৎসা করাতে অর্থ ব্যয় হওয়ায় উপকার হওয়ার চেয়ে ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে উপকারভোগীরা। ছাগল মারা যাওয়ায় উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করা হলেও তারা এ বিষয়ে কোন সহযোগীতা করেনি বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। 


অথচ প্রত্যক উপকারভোগীর অনুকুলে ২০ হাজার ২৫০ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

মৎস্যজিবী আমির হোসেন মলিক জানান, সরকার আমাদের স্বাবলম্বী করার জন্য দুটি ছাগল ও একটি ঘর দিয়েছে। প্রতিটি ছাগল সাড়ে ৭কেজি হওয়ার কথা থাকলেও প্রতিটি ছাগল তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজনের দিয়েছে যা রোগাক্রান্ত। এটি চিকিৎসা করতে আমার সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হয় এর পরেও ছাগল দুটি মারা গেছে। আমাদের জন্য বরাদ্দের অর্ধেকই মৎস্য অফিস খেয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ জানান তিনি।


জেলে মফিজুল ইসলাম জানান,  জেলে তালিকা তৈরিতে মৎস্য কর্মকর্তারা আমার কাছে এক হাজার টাকা চেয়েছে। আমি টাকা না দিতে পারায় আমার কার্ড হয়নি। টাকা দিলে তালিকায় নাম উঠতো বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।


অভিযোগের বিষয় সন্দীপন মজুমদার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই। আর ঊর্ধ্বতন অফিসাররা আমাকে এখানে রাখলে কি করার আছে।’


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা বলেন, ‘উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের অনিয়মের অভিযোগ আগেও পেয়েছি। এবিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও সংশিষ্টদের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।’