তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হিলি'র জনজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, হাকিমপুর উপজেলা প্রতিনিধি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: বুধবার ১৯শে এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হিলি'র জনজীবন

বিগত কয়েকদিনে তীব্র গরম ও দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে দেশের উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর হিলি'র জনজীবন। একটু প্রশান্তির আশায় মানুষ গাছের ছায়া কিংবা শীতল কোনো স্থানে ছুটছে। বেলা বাড়ানো সাথে তাপদাহ বাড়ছে। রোদের তীব্রতায় রাস্তা ঘাট ফাঁকা দেখা গেছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে তেমন বেড় হচ্ছে না। এই গরমে ঠান্ডা বা ডাবের পানি ও রসালো ফল এবং তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসারা।


বুধবার (১৯ এপ্রিল) হিলি স্থলবন্দরের শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। ভ্যাপসা গরমে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে কর্মজীবী মানুষজন। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।


দিনমজুর আবুল কালাম বলেন, অতিরিক্ত গরমে কাজ হাতে উঠছে না। একটু কাজ করলে হ্যাসফেস লাগছে। সকালে কাজে বের হয়েছি কিন্তু দুপুরের কড়া রোদ আর সহ্য হচ্ছে না। তাই কাজের ফাঁকে গাছের নিচে বসে করছি। যে গরম মনে হয় আমার জীবনে কোন দিন দেখি নাই। 


ইজিবাইক চালক মুহিদুল ইসলাম বলেন, ছাতনি রাউতারা থেকে ইজিবাইক নিয়ে হিলি শহরে চালাতে এসেছি। সূর্য উঠার পর থেকে রোদের তাপ অনেক বেড়ে যায়। সকালে তেমন লোক পাওয়া যায় না। আবর দুপুরে রোদের তীব্রতার কারণে রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারি না। সবচেয়ে বড় কথা হলো রমজান মাসের রোজা রাখছি ফলে রাতে ছাড়া ইজিবাইক চালা খুব কষ্ট দায়ক হচ্ছে। সামনে ঈদ কি করবো বুঝতে পারছি না ভাই। 


কর্মকার মানিক চন্দ্র বলেন,আগুনের কাজ করি। এই গরমের মধ্যে কীভাবে কাজ করবো, আর কীভাবে চলবো বুঝতে পারছি না। ঠিকমতো কাজ করতে না পেরে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে।


হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার দাস বলেন, হঠাৎ গরম বেড়ে যাওয়ায় পেশাজীবী, শ্রমজীবী মানুষ, বিশেষ করে রিকশা-ভ্যানচালকদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তীব্র গরমে পানিশূন্যতা ডায়রিয়া কিংবা হিটস্ট্রোক হতে পারে। এ ক্ষেত্রে তাদের একটানা কাজ না করে, বিশ্রাম নিয়ে কাজ করতে হবে। পবিত্র রমজান মাসে ভাজাপোড়া খবার কম খাওয়া, বিশুদ্ধ পানি, ডাবের পানি, রসালো ফল ও তরল খাবারের পরামর্শ দেন তিনি। 


এদিকে তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় শহরে বেড়েছে ঠান্ডা পানীয়ের চাহিদা। ফুটপাতে বিক্রি করা লেবুর শরবত, কুসার (আখঁ) এর রস ও ফলমূল খাচ্ছেন অনেকে। একইসঙ্গে চাহিদা বেড়েছে তরমুজ ও ডাবের।কনফেকশনারী দোকানদাররা জানান, তীব্র গরমে কোমলপানীয়, জুস ও আইসক্রিম খুব চলছে। এছাড়া শহরের ইলেক্ট্রনিক্স দোকানগুলোতে পাখা বিক্রির ধুম লেগেছে।


দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, গত তিন দিন থেকে দিনাজপুর ও আশপাশের শহরগুলোতে সর্ব্বোচ্চ ৩৯.১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আকাশের বৃষ্টি হলে আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যাবে জানান তিনি।