আগামীকাল থেকে ওএমএস এর মাধ্যমে চাল বিক্রি: খাদ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৩০শে আগস্ট ২০২২ ০৫:২৫ অপরাহ্ন
আগামীকাল থেকে ওএমএস এর মাধ্যমে চাল বিক্রি: খাদ্যমন্ত্রী

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে ওএমএস এর মাধ্যমে ২৩৬৩ টি কেন্দ্রে ২ টন ও প্রতিটি ট্রাক সেলে সাড়ে ৩ মেট্রিক টন করে চাল বিক্রি শুরু করা হবে।


মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১১টায় নওগাঁয় সার্কিট হাউসে সারাদেশে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং টিসিবির কার্ড হোল্ডারদের মধ্যে চাল ও আটা বিতরন উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী।


এসময় মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এবং এই কার্যক্রম ৩ মাস ধরে চলমান থাকবে।


মন্ত্রী বলেন, খাদ্য বান্ধবের ক্ষেত্রে ডিভাইস তৈরি করে আমরা স্মার্ট কার্ড তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। পুরোপুরি কাজ শেষ হয়ে গেলেস্মার্ট কার্ড দেয়া হবে, এতে করে কেউ অবৈধভাবে ব্যবহার করতে পারবে না।  


সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, লাইনে দাঁড়িয়ে কেউ যেন একাধিকবার চাল নিতে না পারে এর জন্য টিসিবির কার্ডধারীকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।  মাসে ৫ কেজি করে দুই বার করে দেওয়া হবে। এছাড়াও কাডধারী ছাড়া যারা চাল দিতে যাবে তাদেরকে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে। সেটার উপর তারিখ ও সিল দেয়া থাকবে। যাতে কেউ বার বার চাউল নিয়ে বাজারে বিক্রি করতে না পারে।


মন্ত্রী আরও বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে সরকারি ভাবে চাল সংগ্রহ শতভাগ। দেশে চালের কোন অভাব নেই। সরকারি গুদামে প্রায় ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৫৩১ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত আছে। ইতিমধ্যে চালের বাজার কমতে শুরু করেছে।ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব চালু হলে চালের দাম আরও কমবে এবং সামনে কৃষকরা ধানের নায্যমূল্য পায় সেইটা নিয়েও কাজ করছি আমরা।


সারা বিশ্বেই তেলের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন বাংলাদেশ মূলত আমদানি নির্ভরশীল দেশ। এইটা অস্বীকার করার কিছু নেই। সারা বিশ্বের সব ধরনের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। জাহাজের ভাড়াও ৫ থেকে ৭ গুন বেড়েছে। এর ফলে সমন্বয় করতে গিয়ে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তেলের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে দ্রব্যমূল্য তার চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখানে আমাদের কষ্টের কথা। ভোক্তাদের কষ্টের কথা। যাদের দেশের প্রতি ভালোবাসা নেই এবং অসৎ ব্যবসায়ী রাই তারাই এ কাজটা করছে। এইটা নিয়ন্ত্রণে আমরা বাজার মনিটরিং করছি। যেখানে মজুদ পাচ্ছি জরিমানা করছি তেমনই ওএমএস ও টিসিবি দিয়ে কম দামে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার।


সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা যে চাউলগুলোর অর্ডার দিয়েছি সবগুলোই আসবে আমরা আশা করি না। যার কারণে আমরা বেশি করে চালের অর্ডার দেয়া হয়। দেশে মোটা চাউল আসে না। চিকন চাউল গুলোগুলোই সাধারনত আসে। 


আাদানিশুল্ক যখন ২৫ শতাংশ ছিল তখন কিন্তু ৫০ মেট্রিক টন চাল দেশে এসেছে। অর্ডার দেয়া হয়েছিল প্রায় ১৪লাখ মেট্রিক টন। কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন ভারত থেকে খরচ দিয়ে আমাদের চাউল থেকে প্রতি কেজি দুই টাকা বেশি পড়ে যায় এর জন্য আনে নাই। আশা করি আরও ১০% কমিয়ে দেওয়ায় কেজিতে প্রায় পাঁচ টাকা কম আসবে।

ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারদের কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি বরদাশত করা হবে বলে হুশিঁয়ারি দেন খাদ্যমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো ডিলার ওএসএম কিংবা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচারকালে যদি ধরা পড়ে কিংবা কোনো অনিয়ম করেছে, তা হলে সে যে–ই হোক না কেন, ছাড় পাবে না।


এসময় উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, খাদ্যমন্ত্রীর একান্ত (উপসচিব) সচিব মো.শহিদুজ্জামান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবিরসহ খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।