নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সচিব এইচ এ এম তৌফিক ইমামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এই আদেশ দেওয়া হয়। শুক্রবার (৪ মার্চ) নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, গত বছরের ২৮ নভেম্বর নবীগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়। নির্বাচনে দেবপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শাহ রিয়াজ নাদির সুমন। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব তিনি। তবে ইউনিয়নের সচিব এইচ এ এম তৌফিক ইমাম অফিসের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। বারবার তাগিদ দিলেও কর্ণপাত করেননি।
এই নিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি খোদ চেয়ারম্যান শাহ রিয়াজ নাদির সুমন বাদী হয়ে সচিবের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এতে উল্লেখ করেন- অফিসের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বারবার সচিবকে বলা হলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপণ করেন। এ ছাড়া ২০২১ সালের ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংক এশিয়ার সুবিধাভোগীদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সচিব টাকা জমা দেননি। নিয়মিত অফিসে না আসা, বিভিন্ন বরাদ্দ সঠিক সময়ে বণ্টন করতে না পারাসহ সচিবের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন চেয়ারম্যান।
অভিযোগের ভিত্তিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সরেজমিনে তদন্তে আসেন ইউএনও। বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও তদন্তকালে সচিব তৌফিক ইমাম উপস্থিত হননি। বন্ধ রাখেন নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন। তদন্তে চেয়ারম্যানের করা লিখিত অভিযোগের সত্যতা পায় উপজেলা প্রশাসন। পরে ওই ইউনিয়নের সচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক বরাবর সুপারিশ করেন ইউএনও।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান স্বাক্ষরিত আদেশে দেবপাড়া ইউনিয়নের সচিব তৌফিক ইমামকে ভিজিডির কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা না করা, প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন না করা, উন্মুক্ত ওয়ার্ড সভা না করা, কম্বল বিতরণ বিলম্ব হওয়া, নিয়মিত অফিস না করা এবং ইউপি অফিসের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত করেন।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও শেখ মহি উদ্দিন বলেন, ‘দেবপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। তদন্তকালে ভিজিডির কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের সঞ্চয়ের চার লক্ষ ৪০ হাজার টাকা সচিব ব্যাংকে জমা দেননি বলে প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া চেয়ারম্যানের করা অন্যান্য অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।