সরাইলে সাব-রেজিস্ট্রারের অভাবে বেকায়দায় সেবাপ্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো: তাসলিম উদ্দিন, উপজেলা প্রতিনিধি সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৪ই জানুয়ারী ২০২২ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
সরাইলে সাব-রেজিস্ট্রারের অভাবে বেকায়দায় সেবাপ্রার্থীরা

সরাইল উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক কাল দুপুরে  অপেক্ষমান মানুষের সাথে দাড়িয়ে এমন করে বলছিলেন, সরাইল সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে চরম ভোগান্তি। গত বৃহস্পতিবার  লোকগুলো সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে। অনেকে দলিলের কাজ শেষ করেছে আবার ফিরে গেছে আজ আবার এখনও কাজ হয়নি। সাব-রেজিস্ট্রার নাকি সপ্তাহে একদিন আসেন। অফিসিয়ালভাবে আরো কতো কিছু আছে। তাড়াহুড়া দলিল করতে আমরা সাব কবলা, দানপত্র, বায়না নামা, ক্ষমতা অর্পনও অছিয়তনামায় সরকারি রেজিস্ট্রি ফি কত খরচ তা কেউ জানেন না বলে এ শিক্ষক বলছিলেন।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলায় দুই মাস ধরে সাব-রেজিস্ট্রার পদ শূন্য পড়ে আছে। খণ্ডকালীন দায়িত্ব (সপ্তাহে একদিন) পাওয়া সাব-রেজিস্ট্রার  অফিসে বসেন মাত্র বৃহস্পতিবারে। এতে মানুষের ভোগান্তিসহ থেমে আছে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কার্যক্রম। ফলে জরুরি প্রয়োজনে জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।  বৃহস্পতিবার ১৩ জানুয়ারি দুপুরে মানুষের দীর্ঘ লাইনে জমায়েত ছবি তোলা হয়। এদিকে একজন দলিল করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন।


 সরাইল সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাস ধরে স্থায়ী সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় অফিসের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে খণ্ডকালীন দায়িত্ব পাওয়া সাব-রেজিস্ট্রার আসলেও তিনি সাপ্তাহিক বৃহস্পতিবারে একদিন বসে। এভাবে কর্মকর্তার অভাবে মাসের পর মাস ধরে একটা সরকারি অফিস অকার্যকর হয়ে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা। অনেকের জরুরি চিকিৎসা, বিদেশ গমন, বিয়ে,জমির নকল উত্তোলন আটকে আছে।৭০ বছরের ঊর্ধ্বে আজিজ মিয়া বলেন, পাচ মাইল দুর থেকে আইছে সকালে দেখেন এখন বেলা শেষ তবেও দলিলের কাজ এখনো হইলনা? সকাল থেকে এখনো বলতেছে সিরিয়ালে বলে আছে। আর কত হানে সিরিয়াল শেষ হবে  আল্লাহ জানে।


শাহবাজপুর থেকে জমি কিনতে আসা রব মিয়া বলেন, আমি এক খণ্ড জমি কিনেছি। দলিলও লেখা শেষ প্রায় দিন আগে। টাকাও পরিশোধ করেছি বিক্রেতাকে। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রারের অভাবে দলিল নিজের করতে পারছি না। আজকে আসছি দেখি দলিল করা যায় কি না। দলিলের যে লাইন।আল্লাহই জানে কবে এই দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ মিলবে।


সরাইলের একাধিক দলিল লেখক বলেন,শখ করে কেউ জমি বিক্রি করে না। গত দুমাসে সাব- রেজিস্ট্রারের অপেক্ষায় জমা পড়ে আছে প্রায় অনেক দলিল। এ ভোগান্তি  দিনদিন বেড়েই চলেছে। জন ভোগান্তি বিবেচনায় দ্রুততার সঙ্গে একজন স্থায়ী সাব-রেজিস্ট্রার নিয়োগ জরুরি।


সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাব-রেজিস্ট্রার পদায়ন ও বদলি হয় আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় থেকে। তাই মন্ত্রণালয়ের সুনজর ছাড়া ভোগান্তি লাঘব সম্ভব নয় বলে মনে করেন তারা।এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের  জানানো হবে বলে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আরিফুল হক মৃদুল তিনি বলেন, আশা করছি এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দ্রুত শূন্য পদে সাব-রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেবে সরকার।