
মানুষ মানুষের জন্য, সম্পদ জীবনের জন্য। সম্পদের সংকটে যদি জীবনপ্রবাহ থেমে যায় তখন সম্পদ উপার্জনের মৌলিক উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়। রাজা-প্রজা, উজির-নাজির, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই আল্লাহর সৃষ্ট জীব মানুষ। মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে, মুসলমান মুসলমানের কল্যাণে হাত বাড়াবে, বিপদে-আপদে সান্ত্বনার কোমল পরশ বুলাবে—এটাই মানবতা। এটাই ইসলামের শিক্ষা।হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘সব মুমিন এক দেহের মতো, যদি তার মাথায় ব্যথা হয় তখন তার সারা শরীরই ব্যথিত হয়। আর যদি তার চক্ষু অসুস্থ হয়, তখন তার সর্বাঙ্গ অসুস্থ হয়ে পড়ে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস ১৮৪৩৪)
দ্রুত মজলিস ত্যাগ করে তিনি ভেতরে প্রবেশ করে বেরিয়ে এলেন। প্রিয় সাহাবি বেলাল (রা.)-কে আজান দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। নামাজ শেষ করে উপস্থিত সাহাবিদের উদ্দেশে খুতবা প্রদান করলেন। খুতবার শুরুতে কোরআন মাজিদের একটি আয়াত পাঠ করলেন। ‘হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদেরকে একটি মাত্র ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকে সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যিনি তাদের দুজন থেকে বহু নর-নারী (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। (সুরা : নিসা, আয়াত : ১)
প্রিয় নবীজির প্রতি তাদের ভালোবাসা দেখে উপস্থিত সাহাবিদের উদ্দেশ করে তিনি বললেন, যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোনো উত্তম প্রথা বা কাজের প্রচলন করে, সে তার কাজের সওয়াব পাবে এবং তার পরে যারা তার এই কাজ দেখে তা করবে এর বিনিময়েও সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। তবে এতে কোনো অংশে তাদের সওয়াব কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে ইসলামপরিপন্থী কোনো খারাপ প্রথা বা কাজের প্রচলন করবে, তাকে তার এ কাজের বোঝা (গুনাহ এবং শাস্তি) ভোগ করতে হবে। তারপর যারা তাকে অনুসরণ করে এ কাজ করবে, তাদের সমপরিমাণ বোঝাও তাকে বইতে হবে। তবে এতে তাদের অপরাধ ও শাস্তি কোনো অংশেই কমবে না। (মুসলিম, হাদিস ১০১৭)

বীজি তা দেখে জিজ্ঞেস করলেন, হে ওমর! তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য কী রেখে এসেছ? আমি বললাম, এর সমপরিমাণ সম্পদ। এদিকে হজরত আবু বকর (রা.) তাঁর সব সম্পদই নিয়ে এলেন। নবীজি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু বকর! তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য কী রেখে এসেছ। তিনি উত্তরে বললেন, আমি তাদের জন্য আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলকে রেখে এসেছি।
এ ঘটনা দেখে ওমর (রা.) হজরত আবু বকর (রা.)-কে বললেন, ভবিষ্যতে কোনো দিন কোনো ব্যাপারে অধিক ফজিলতের অধিকারী হওয়ার জন্য আমি আপনার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করব না। (আবু দাউদ, হাদিস ১৬৭৮)রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুমহান মানবিক চেতনা ধারণ করে সংকটকালীন এ পরিস্থিতিতে বিত্তবানদের- অসহায় ও অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি। তা ছাড়া ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান ‘সদকাতুল ফিতর’ আদায়ের উত্তম সময়ও এটা।